মেয়েদের ওভুল্যশান | Female Ovulation |

মেয়েদের ওভুল্যশান | Female Ovulation | ডাঃ মাসুদ হোসেন।

🇨🇭 ওভুল্যশান ঘটে যখন ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেক মুক্ত হয়। প্রতি ঋতুচক্রের সময় ডিম্বাশয় থেক একটি বা তার বেশী ডিম্বাণু মুক্ত হয়। সাধারণত ডিম্বাশয়ের মধ্যে 15/20 টি ডিম্বাণু পরিণত হয়, তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ডিম্বাণুটি ডিম্বাশয়ের গুটিকা থেকে মুক্ত হয়। ডিম্বটি যখন সম্পূর্ণরূপে পরিণত হয়ে ওঠে কেবলমাত্র তখনই সেটি মুক্ত হতে পারে।

🇨🇭 এরপর সেটি ফ্যালোপিয়ান টিউবে যায়, যেটি ডিম্বাশয় এবং জরায়ুর মধ্যে সাংযোগ স্থাপন করে। এই ফ্যালোপিয়ান টিউবের মধ্যেই সুযোগ পেলে ডিম্বাণুটি শুক্রাণুর সাথে মিলিত হয় এবং নিষেক ঘটে। ওভুল্যশান এবং বিভিন্ন হরমোনের মুক্তি হাইপোথ্যালামাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যেটি মস্তিষ্কের একটি পার্ট। সহজ কথায় বলা হয় ওভুল্যশান হল এমন একটি সময় যখন মহিলাদের প্রজননের ও সন্তানধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি হয়।

🇨🇭 ওভুল্যশান Ovulation সময় কখন?

ডিম্বানু নির্গমনের সময়। যদি আপনি জানতে পারেন যে আপনার ওভুল্যশান এর সময় কখন এবং যদি আপনি বিবাহিত হন তাহলে অরক্ষিত যৌন মিলনের ফলে সে সময়ে আপনার প্রেগন্যান্সি চান্স বেড়ে যায়। যদিও এটা অসুবিধাজনক যে সঠিক ওভুলেশন এর দিনটি নির্ধারণ করা, পরবর্তী ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার 12 থেকে 14 দিন আগে সাধারণত এই ঘটে থাকে। এটা মনে রাখতে হবে যে এটা একটি গড় আনুমানিক হিসাব, ওভুলেশন কয়েকদিন এই সময়ের আগে বা পরেও ঘটতে পারে। ওভুল্যশান হয় সাধারণত পিরিয়ড হবার সপ্তাহ দুই আগে। সহজ কথায় বলি। মেয়েদের শরীরে ইউটিরাস ছাড়াও দুটি ওভারি থাকে। এই ওভারি দুটো থেকে পরিপক্ক একটা ডিম্বানু বের হয়। এই ডিম্বানুই স্পার্মের সংস্পর্শে আসলে নিষিক্ত হয়ে প্রেগনেন্সি ঘটায়। মাসের একটা নির্দিষ্ট সময়ে, সাইকেল অনুযায়ী ডিম্বানু বের হয় ওভারি থেকে, তারপর নিষিক্ত হওয়ার জন্য Fallopian Tube এ চলে যায়। এই ডিম্বানু বের হওয়ার সময়টিই ওভুল্যশান টাইম। পিরিয়ড হবার সপ্তাহ দুই আগে ওভুল্যশান ঘটে।

মেয়েদের ওভুল্যশান | Female Ovulation

সাধারণত ঋতুচক্রে 28 দিন থাকে, পিরিয়ডের প্রথম দিনটিকে Day-01 হিসেবে ধরুন। এইভাবে হিসেব অনুযায়ী 10 থেকে 15 দিনের মধ্যেই ওভুলেশন ঘটতে পারে। যদি ঋতুচক্র অনিয়মিত হয় তাহলে এটি এক সপ্তাহ এগিয়ে বা পিছিয়ে যেতে পারে কখনো কখনো এটি এক মাস পর্যন্ত বা তার বেশি পিছিয়ে যেতে পারে। যখন একবার ডিম্বাণু মুক্ত হয় পর তার আয়ু 24 ঘন্টা থাকে। যদি এই সময়ের মধ্যে এটি নিষিক্ত না হয় তাহলে এটি নষ্ট হয়ে যায় এবং পরবর্তী পিরিয়ড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। অপরদিকে আপনার সঙ্গীর শুক্রাণুর জীবনকাল অনেক বেশি এটি প্রায় পাঁচ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকে সঙ্গমের পর থেকে।

🇨🇭 ডিম্বানু থাকে ডিম্বাশয়ে। একটা মেয়ের ডিম্বাশয়ে মিলিয়ন সংখ্যক অপরিণত ডিম্বানু থাকতে পারে। ডিম্বস্ফোটনের সময় পরিণত ডিম্বানু ফেলোফিয়ান নালিকা দিয়ে ক্রমশ:নালিকার নিচের দিকে যেতে থাকে এবং অপেক্ষারত শুক্রানুর সাথে মিলিত হয়ে নিষিক্ত হয়। ডিম্বস্ফোটনের সময় সম্ভাব্য গর্ভধারণ প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য জরায়ুর প্রাচীর পুরু হয়ে উঠে। সাধারণত একবার ডিম্বস্ফোটনের সময় একটা ডিম্বানুই নির্গত হয়।একটা ডিম্বানু ডিম্বাশয় ত্যগ করার পর সাধারণত: 12-24 ঘন্টা বেঁচে থাকে। ডিম্বস্ফোটনের সময় অনেকে ডিম্বাশয়ের আশেপাশের এলাকায় মৃদু ব্যাথা অনুভব করতে পারে। ডিম্বস্ফোটনের সাথে মাসিকের ( Period ) কোন সম্পর্ক নেই। ডিম্বস্ফোটন না হলেও মাসিক হতে পারে আবার মাসিক ছাড়াও ডিম্বস্ফোটন ঘটতে পারে।

🇨🇭 অনিষিক্ত ডিম্বানু খন্ড বিখন্ড হয়ে পরে জরায়ুর প্রাচীর কর্তৃক শোষিত হয়ে যায়। ডিম্বস্ফোটনের লক্ষণ:গর্ভাশয় হতে নির্গত তরলের প্রকৃতি পরিবর্তন ( তরলে মৃদু পিছলে পদার্থ থাকবে যা প্রকৃতপক্ষে ডিম্বস্ফোটনপূর্ব ও স্ফোটনকালীন – Egg White’s এর ভগ্ন অংশ ) গর্ভাশয়ের দৃড়তার পরিবর্তন ,উদরের একপাশে ব্যাথা অনুভব করা, যৌন চাহিদা বেড়ে যাওয়া,উদর স্ফীত হয়ে উঠা এবং বিশেষত: শরীরের তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ,তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, ইত্যাদি ডিম্বস্ফোটনের লক্ষন।

🇨🇭 এছাড়াও অনেকের ক্ষেত্রে ডিম্বস্ফোটনের সময় হালকা রক্তপাত হতে পারে। চক্র ও ডিম্বস্ফোটনের সম্ভাব্য সময়, পিরিয়ডের ১ম দিন থেকে পরবর্তী পিরিয়দের ১ম দিন পর্যন্ত সময়কে একটা চক্র বলে।

🇨🇭 চক্র সাধারণত: 28-32 দিন হয়। তবে তা এর চেয়ে কম ও ক্ষেত্রবিশেষে বেশি এমনকি 42 দিন পর্যন্ত হতে পারে। চক্র দুই ধাপে সম্পন্ন হয়।

🩸 1. Follicular Phase:
চক্রের প্রথম দিন থেকে ডিম্বস্ফোটনের দিন পর্যন্ত সময়।ব্যাক্তিবিশেষে এটা 7 দিন থেকে 30 দিন হতে পারে।

🩸 2. Luteal phase : ডিম্বস্ফোটনের দিন থেকে পরবর্তী পিরিয়ডের আগ পর্যন্ত সময়। এটা সাধারনত 12-16 দিন স্থায়ী হয়।ডিম্বস্ফোটনের সময়ই নির্ধারন করে পরবর্তী পিরিয়ড কখন শুরু হবে । অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে চক্রের ফলিকুলার ফেজ অনির্দিষ্ট হলেও লুটিয়াল ফেজ অনেকটা সুনির্দিষ্ট এবং তা থেকে আমরা ডিম্বস্ফোটোনের সময় অনুমান করতে পারি। কারো চক্র যদি 32 দিন হয় তাহলে আমরা বলতে পারি তার ডিম্বস্ফোটন হবে 32-16=16 থেকে 32-12=20 তম দিনের মধ্যে। চক্র কিভাবে কাজ করে, যখন মাসিক শুরু হয় তখন ইস্ট্রোজেন লেভেল কম থাকে। হাইপোথ্যালামাস যা হরমোনের লেভেল নিয়ন্ত্রন করে, তখন পিটুইটারি গ্ল্যান্ডকে উদ্দীপ্ত করে এবং তা তখন Follicle Stimulating Hormone ( FSH ) নির্গত করে যা পরিণত ডিম গঠনের জন্য ফলিকল তৈরিতে সহায়তা করে।

WhatsApp Image 2023 05 23d at 12.26.00

ডিম পরিণত হলে ইস্ট্রোজেন লেভেল বেড়ে যায় যা হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্ল্যান্ডকে তখন এ সংকেত পাঠায়।এরপর ল্যুটেনাইজিং হরমোন নির্গত হয় এবং তখন পরিণত ডিম ডিম্বাশয় হতে বের হয়ে নিষিক্ত হবার জন্য ফেলফিয়ান নালিকা দিয়ে নিচের দিকে অগ্রসর হয়।আর তখন প্রোজেস্টেরন হরমোন নির্গত হয় যা ভ্রূন ধারনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং জরায়ুর প্রাচীরকে পুরু করে তোলে। ডিম্বানু পরিস্ফোটনের পর ও 12-16 দিন পর্যন্ত প্রোজেস্টেরন হরমোন নির্গত হয়। এমনকি যদি ডিম্বানু নিষিক্ত হয়েও যায় তাও প্রোজেস্টেরন হরমোন নির্গত হয় প্ল্যাসেন্টা গঠন এর আগ পর্যন্ত। ডিম্বানু নিষিক্ত হলে এর 1 সপ্তাহ পরপরই তার লক্ষন শরীরে ফুটে উঠে। ডিম্বানু নিষিক্ত না হলে তার ভগ্নাংশ শরীর হতে স্রাব আকারে বেরিয়ে যায়। প্রোজেস্টেরন হরমোন নির্গত হওয়া বন্ধ হয়ে গেলে জরায়ুর প্রাচীর ক্ষয়ে পড়তে থাকে এবং তখন মাসিক ( Menstrual Cycle ) শুরু হয়। এবং প্রতিমাসে এই ঘটনাই চক্রাকারে পুনারাবৃত্ত হতে থাকে।

🇨🇭 গর্ভবতী হতে স্বামীর সাথে কখন মিলিত হবেন?

🇨🇭 ডিম্বস্ফোটনের Ovulation সাতদিন 7 দিনব্যাপী সময়ের মধ্যে স্বামীর সঙ্গে মিলন হলে একজন স্ত্রীর গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। সাধারণত শেষ মাসিকের 12 দিন পর এই সময় আসে।একটি ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে নির্গত হওয়ার পর 12 থেকে 24 ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে।

🇨🇭 গর্ভধারণের লক্ষ্যে এ সময়ের মধ্যেই ডিম্বাণুটিকে শুক্রাণুর সাথে মিলিত হতে হবে। এমন কোন কথা নেই যে যেই দিন ডিম্বস্ফোটন হয় শুধু সেই দিন মিলিত হলেই আপনি গর্ভবতী হতে পারবেন। একজন নারীর শরীরে শুক্রাণু 2-3 দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই কারণে ডিম্বস্ফোটনের 2-3 দিন আগে মিলন হলেও শুক্রাণুটি ডিম্বাণুর জন্যে ডিম্বনালীর ভেতর অপেক্ষা করে থাকতে পারে।

🇨🇭 ডিম্বস্ফোটন Ovulation কখন হয়?

🇨🇭 ডিম্বস্ফোটনের সঠিক সময় নির্ধারণ সম্ভব না, যদি না আপনি ফার্টিলিটি সচেতন হোন।
অধিকাংশ নারীর মাসিক শুরুর 10-16 দিন আগে ডিম্বস্ফোটন হয়। আরও পরিস্কার করে বলতে গেলে মাসিকের প্রথম দিন থেকে একজন নারীর মাসিক চক্র গণনা করা হয়। এর কিছুদিন পর তার ডিম্বস্ফোটন Ovulation হয় এবং তার 10-16 দিন পর তার আবার মাসিক হয়। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী মাসিকের গড় চক্রকাল হচ্ছে 28 দিন অন্তর অন্তর। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর কিছু বেশি অথবা কম সময়েও মাসিক হতে পারে, যা অস্বাভাবিক নয়।

🩸 তাড়াতাড়ি মা হবার জন্য সপ্তাহে অন্তত, তিনবার যৌন মিলন করুন। সঠিক ভাবে মা হবার জন্য নিয়মিত যৌন মিলন অত্যন্ত জরুরী। স্বামী-স্ত্রী সাধারনত হিসেব করতে থাকেন আনুমানিক কখন ডিম্ব নি:স্বরন ওভুলেশান হবে? সেজন্য তারা অন্য সময় যৌন মিলন থেকে বিরত থাকেন। এটা সত্য যে ওভুলেশান ছাড়া কনসিভ করা সম্ভব নয় – তবে যেহেতু নারীর ওভুলেশান সব সময় তাদের অনুমান করা সময়ে নাও হতে পারে তাই সপ্তাহে অন্তত তিন দিন স্বামী-স্ত্রীর মিলন গর্ভধারনের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।

🩸 গর্ভধারন নিশ্চিত করতে ডিম্বস্ফোটন ভবিষ্যদ্বাণী কিট অথবা নিষেক পরীক্ষন কিট ব্যবহার করুন। Ovulation Prediction Kit হচ্ছে একধরনের স্টি্রপ যা শরীরের তাপমাত্রা এবং প্রস্রাবে Luteinizing হরমোনের লেভেল পরীক্ষা করে ডিম্বনিস্বরনের সময় সম্পর্কে ধারনা দিতে পারে। অনেক নারীর ক্ষেত্রে ওভুলেশান চার্ট অথবা অন্য সব হিসাব,নিকাশ কিছুটা কনফিউজিং। তাই Ovulation Prediction Kit দিয়ে ওভুলেশানের সময় আগে থেকে জেনে মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাছাড়া ( ক্লিয়ার ব্লু ইজি মনিটর ) জাতীয় নিষেক পরীক্ষন যন্ত্র দিয়েও গর্ভধারনের সম্ভাবনার একটি চিত্র পাওয়া যায়। নিষেক পরীক্ষন যন্ত্রও ওভুলেশান প্রিডিকশন কিটের মত লুটিইনজিং হরমোনের পরিবর্তন সহ অন্যন্য আনুষাঙ্গিক হরমোনাল পরিবর্তনের বিবেচনায় গর্ভধারনের সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে।

🩸 গর্ভধারনের জন্য ডিম্বনিস্বঃরনের পুর্বে যৌন মিলন করুন,পরে নয়। অনেকসময় স্বামী-স্ত্রী ডিম্ব নিষেক এর জন্য মিলনের সঠিক সময় নিয়ে সন্দেহে ভোগেন। প্রতি মাসে আপনার খুব একটা ছোট সময় আছে গর্ভধারনের। নারীর ডিম্বনিঃস্বরনের পর আনুমানিক 24 ঘন্টা তা জীবিত থাকতে পারে। অন্যদিকে পুরুষের শুক্রানু নারীর যৌনাঙ্গে প্রায় পাঁচ দিনের মত জীবিত থাকতে পারে। সেই কারনে ওভুলেশানের 2/3 দিন আগে যৌন মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই ওভুলেশানের দিনের জন্য অপেক্ষা না করাই বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে।

আরো পড়ুনঃ  মেয়েদের যৌন রোগ সংক্রান্ত সমস্যা গুলোর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা।

🩸 শুধুমাত্র ঋজচক্র ক্যালেন্ডারে নির্ভর করবেন না। আপনাদের অনেকে হয়তো শুনে আসছেন মাসিক ঋজচক্রের 14 তম দিন মিলন করলে গর্ভধারনের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এটি আসলে যাদের মাসিক চক্র 28 দিনের তাদের হিসেবে এ কথাটির প্রচলন হয়েছে। এটি দ্বারা অনুমান করা হয় মাত্র – কখন ডিম্বনিস্ব:রন হতে পারে। তবে এটি একদম 100 ভাগ নির্ভুল পদ্ধতি নয়। অনেক নারী ঠিক 14 তম দিনে ওভুলেট করেন না। কিন্তু আপনি যদি ওভুলেশান প্রিডিকশান কিট অথবা ডিম্ব:স্বরনের কোন আলামত লক্ষ্য করে মিলন করেন তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।

🩸 গর্ভধারনের চেষ্টার আগে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।নিশ্চিত করুন আপনি সন্তান ধারনের জন্য স্বাস্থ্যগত ভাবে তরি আছেন। শাররীক ইনফেকশান, STD তথা যৌন বাহিত রোগ অথবা দুর্বল স্বাস্থ্য আপনার গর্ভধারনে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

🩸 যখন বাচ্চা নেবার চিন্তা করছেন তখন ধুমপান, মদ্যপান এবং যাচ্ছেতাই ভাবে মেডিসিন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এটি একটি সাধারন জ্ঞানের কথা কিন্তু অনেক নারী ধুমপান, মদ্যপান ইত্যাদির বহাল রেখে গর্ভধারন করেতে চান। কিন্তু বাস্তবতা হল উপরোক্ত সব বদঅভ্যাস ডিম্ব নিষেকে প্রভাব পেলতে পারে এবং এটি গর্ভের সন্তানের জন্য অতিমাত্রায় ক্ষতিকর।

মেয়েদের ওভুল্যশান | Female Ovulation

🩸 গর্ভধারনের জন্য আনন্দদায়ক যৌন মিলন খুবই জরুরী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যখন কোন যুগল সন্তান নিতে মানসিক ভাবে প্রস্তুত হন তখন তারা যৌন মিলনকে একপ্রকার ডিউটি মনে করতে শুরু করেন এবং মিলনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হন।রোমান্টিক কোন প্ল‍্যান করুন অথবা সম্পর্ক স্পাইস-আপ করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। কারন আপনি মিলনে কি রকম অনুভূতি পাচ্ছেন তার উপরও গর্ভধারনের সম্ভাবনা নির্ভর করে। গবেষনায় দেখা গেছে মিলনকালে নারীর পুর্নতৃপ্তি সন্তানধারনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। পুর্নতৃপ্তির ফলে নারীর জরায়ুর দিকে শুক্রানু প্রাকিতিক ভাবে সঞ্চালিত হয় এবং পুরুষের তৃপ্তি বীর্যে শুক্রানুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে।

🩸 কিছু যৌন আসন শুক্রানুকে বেশি সময় যোনীতে রাখতে সহায়তা করে। মিসনারী আসন হচ্ছে সবছে ভাল আসন যখন আপনি গর্ভধারনের চেষ্টা করছেন। যখন আপনি সন্তান নেবার পরিকল্পনা করছেন তখন ঐসকল আসন থেকে বিরত থাকুন যেখানে নারী পুরুষের উপর আরোহন করে। কারন মধ্যকর্ষন শক্তির প্রভাবে শুক্রানু লিক হয়ে বেরিয়ে পড়তে পারে। কিংবা মিলনকালে নারীর কোমরের নিচে একটি বালিশ দিয়ে রাখতে পারেন যাতে তার যোনীতে বেশি সময় শুক্রানু অবস্থান করার সম্ভাবনা বাড়ায়।

🩸 গর্ভবতী হবার জন্য কঠিন কোন চেষ্টা করতে হয়না।অনেক দম্পতির ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ে গর্ভধারন বিষয়টি ঘটে যায়। অনেকে আবার লম্বা সময় চেষ্টা করেও সফল হননা। যদি আপনি চেষ্টা করার এক বছরের মধ্যে সন্তান সম্ভবা না হন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের স্বরনাপন্ন হন।
রজঃস্রাব উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

🇨🇭 রজঃস্রাব- Menstrual Cycle: ইংরেজি: Menstruation. হলো উচ্চতর প্রাইমেট বর্গের স্তন্যপায়ী স্তরী,একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে এটিকে বাংলায় সচরাচর মাসিক বলেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীর ডিম্বাশয়ে ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ন টিউব দিয়ে জরায়ুতে চলে আসে এবং 3-4 দিন অবস্থান করে। এ সময় যদি পুরুষের সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে নারীর জরায়ুতে শুক্র না আসে এবং এই না আসার কারণে যদি ডিম্ব নিষিক্ত না হয় তবে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুগাত্রের অভ্যন্তরতম সরস স্তর
(এন্ডমেট্রিয়াম) ভেঙ্গে পড়ে। এই ভগ্ন ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্ত বাহ থেকে উৎপাদিত রক্তপাত সব মিশে তৈরী তরল এবং তার সংগে এর তঞ্চিত এবং অর্ধতঞ্চিত মিশ্রণ কয়েক দিন ধরে লাগাতার যোনিপথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই রজঃস্রাব বা রক্তস্রাব। কখনো একে গর্ভস্রাব হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। যদি নারী জরায়ুতে অবমুক্ত ডিম্বটি পুরুষের স্খলিত শুক্র দ্বারা নিষিক্ত হয়ে এণ্ডোমেট্রিয়ামে প্রোথিত (ইম্প্ল্যান্টেশন) হয় তবে আর রজঃস্রাব হয় না। তাই মাসিক রজঃস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

🇨🇭 বন্ধ্যতা (Infertility): গর্ভধারণের অক্ষমতাকে বন্ধ্যতা বলা হলেও, এটির প্রচলিত বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা কিন্তু সেটি নয়। সাধারণভাবে 12 মাস ধরে অবাধ যৌনসংগমের পরও যখন গর্ভসঞ্চার ঘটে না, তখন সেটিকে গর্ভ-ধারণ সমস্যা বা বন্ধ্যতা বলা হয়। গর্ভ-সঞ্চার হওয়ার পর সেটিকে পূর্ণাবস্থা পর্যন্ত ধরে রাখার অক্ষমতাও এই সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে। গর্ভধারণের ক্ষমতা বয়সের উপর নির্ভর করে। মেয়েরা 20 থেকে 30 বছরের মধ্যে সহজে গর্ভবতী হতে পারে। 35 বছর বয়সের পরে গর্ভধারণ ক্ষমতা দ্রুত কমতে সুরু করে এবং গর্ভ-বিপর্যয়ের ( Miscarriage ) সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

🇨🇭 গর্ভধারণের সমস্যা প্রায় 15 শতাংশ দম্পতির ক্ষেত্রেই ঘটে। 50 শতাংশ ক্ষেত্রে এই সমস্যার কারণ নারীর শারীরিক সমস্যা- নারীর ফ্যালোপিয়ান টিউব, গর্ভাশয় (Uterus), কিংবা ডিম্বাশয়ের (Overies) সমস্যা। 35 শতাংশ ক্ষেত্রে সমস্যাটি পুরুষের – যার মধ্যে সবচেয়ে প্রধান হল বীর্যে শুক্রাণুর স্বল্পতা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেয়েদের বন্ধ্যতার কারণ তাঁরা নিজেরা যখন মাতৃগর্ভে ছিলেন – তখন তাঁদের মায়ের ধশি ওষুধ ব্যবহার। অনেক সময়ে বন্ধ্যতার সঠিক কারণ ডাক্তাররা খুঁজে পান না। সন্তানলাভে ইচ্ছুক দম্পতিদের প্রথম জানা দরকার মাসের কোন দিনগুলিতে স্ত্রীর গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। স্ত্রীর বিশ্রামকালীন দেহের তাপমান বা উষ্ণতা মেপে এই সময়টা মোটামুটি বুঝতে পারা যায়।

মেয়েদের ওভুল্যশান | Female Ovulation

ডিম্বানু পূর্ণতা প্রাপ্ত হলে সেটি ডিম্বাশয় থেকে মুক্ত হয়ে জরায়ু বা গর্ভাশয়ের দিকে যায় (Ovulation)। ডিম্বাণু গর্ভাশয়-মুক্ত হওয়ার একটু আগে দেহের তাপমান কমে যায়। তার 24 ঘণ্টা পরেই তাপমান দ্রুত বৃদ্ধি পায়। প্রত্যেকদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানা ছাড়ার আগে যদি দেহের তাপমানের একটা চার্ট তৈরি করা যায়, তাহলে সেটি পরীক্ষা করে, কখন গর্ভসঞ্চার হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বা কম – সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব। এর জন্য উষ্ণতা মাপার যে থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়, সেটিতে তাপমানের অল্প তারতম্যও ভালোভাবে দেখতে পাওয়া যায়। তাপমান সাধারণত: 0.4 ডি ফারেহাইট (0.2 ডি সেণ্টিগ্রেড ) থেকে 1 ডি. ফারেনহাইট ( 0.6 ডি. সেণ্টিগ্রেড ) বাড়ে। মেয়েদের ঋতুচক্রে এটি নিয়মিত ঘটে বলে দেহের তাপমাত্রা ঋতুচক্রের কোন সময়ে প্রথমে কমে তারপর বেড়ে যাচ্ছে জানা থাকলে গর্ভসঞ্চারের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দিনগুলি বার করা সম্ভব। সাধারণভাবে ডিম্বাণু-মুক্তির 5 দিন আগে থেকে ডিম্বাণু-মুক্তির দিন পর্যন্ত যৌনমিলনে গর্ভসঞ্চারের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

( ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু মুক্ত হবার পর 12 থেকে 24 ঘণ্টা তাজা অবস্থায় থাকে, পুরুষদের শুক্রাণুও 3 থেকে 5 দিন নারীদের জননেন্দ্রিয়র মধ্যে সজীব অবস্থায় থাকতে পারে। সেইজন্য ডিম্বাণু-মুক্তির দিন পাঁচেক আগে যৌনমিলন হলেও শুক্রাণু ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে পারে ) এছাড়া অন্য উপায়েও সন্তান ধারণের জন্য সবচেয়ে অনুকূল সময়ে বার করা যায়। সাধারণভাবে মেয়েরা প্রতিমাসে 5 দিন উর্বরা অবস্থায় থাকে। এই উর্বরা সময়টি হল ঋতুচক্র বা মাসিক সুরু হবার 12 থেকে 16 দিন পর্যন্ত। যাদের ঋতুচক্র নিয়মিত, তাদের ক্ষেত্রেই শুধু এটা মোটামুটি ভাবে সত্য। ঋতুচক্র (অর্থাৎ মাসিক সুরু হবার দিন থেকে পরের মাসিক সুরু হবার দিন পর্যন্ত)।

🇨🇭 সাধারণত- 28 দিনের হয়, আর ডিম্বাণু ডিম্বাশয়-মুক্ত হয় ঋতুচক্রের মাঝামাঝি। সেই থেকেই এই সময়ের হিসেবটা পাওয়া যায়। স্ত্রীর বয়স 35 বছরের কম হলে, এক বছর চেষ্টা করার পরও যদি তাঁর গর্ভধারণ না হয়, তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। ডাক্তাররা নানাভাবে এর চিকিৎসা করতে পারেন।

🇨🇭 ডিম্বাশয় নি:সৃত হরমোন: ( Hormones Secreted From Ovary )

🩸 ইস্ট্রোজেন – Oestrogen:

ইস্ট্রোজেনের ক্ষরণস্থল: স্ত্রীলোকের ডিম্বাশয়ের পরিণত ডিম্বথলি থেকে ইস্ট্রোজেন হরমোন নিঃসৃত হয় ।

🩸 ইস্ট্রোজেনের কাজ:

  1. স্টেরয়েডধর্মী এই হরমোন স্ত্রীদেহের যৌনাঙ্গের পরিবর্তন এবং যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশে সাহায্য করে।
  2. ত্বকের নীচে স্নেহপদার্থের সঞ্চয় ঘটিয়ে এই হরমোন নারীসুলভ দেহগঠন করতে সাহায্য করে।
  3. নারীর দেহে লোমের আধিক্য এবং কোমল কন্ঠস্বরে ইস্ট্রোজেনের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে।
  4. এই হরমোন স্ত্রীলোকের মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে।
  5. ইস্ট্রোজেন হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণে অল্প বয়সে যৌবনোদ্গম হয়।
  6. ইস্ট্রোজেন কম ক্ষরণের ফলে স্ত্রী-যৌনাঙ্গ অপরিণত থাকে এবং দেহে অন্যান্য গৌণ যৌন লক্ষণ ভালোভাবে প্রকাশ পায় না।

🩸 প্রোজেস্টেরন- Progesteron:

🩸 প্রোজেস্টেরনের ক্ষরণস্থল: স্ত্রীলোকের ডিম্বাশয়ের পীত গ্রন্থি এবং প্লাসেন্টা থেকে প্রোজেস্টেরন হরমোন ক্ষরিত হয়।

🩸 প্রোজেস্টেরনের কাজ:

  • 🧪 প্রোজেস্টেরন স্ত্রীদেহের গর্ভকালীন পরিবর্তন ঘটায়।
  • 🧪 এই হরমোন প্রসবকালীন সময়ে স্ত্রীদেহকে প্রসবের উপযুক্ত করে তোলে।
  • 🧪 প্রোজেস্টেরন ডিম্বাণু নিঃসরণ এবং ভ্রূণের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • 🧪 প্রসবকালীন সময়ে এই হরমোন ডিম্বাশয়ে প্লাসেন্টা Placenta বা অমরা গঠনে সাহায্য করে।
  • 🧪 প্রোজেস্টেরন কম ক্ষরণের ফলে গর্ভপাত ঘটতে পারে।
  • 🧪এই হরমোন নারী দেহে গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশে সাহায্য করে।

🇨🇭 ডিম্বাশয় Ovary:
স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রাইমেট বর্গের প্রাণীকূলের, স্ত্রীপ্রজনন তন্ত্রের একটি অন্যতম অঙ্গ।

🇨🇭 স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রের একটি অংশ। জরায়ু’র উপরের উভয় পার্শ্ব জুড়ে শ্রেণিগহ্বরের পার্শ্ব-দেওয়ালের গায়ে লেগে থাকে এই অঙ্গটি। এর সংখ্যা 2 টি। এদের আকার অনেকটা বাদামের মতো এবং রং ধূসর গোলাপী বা ধূসর। এদের প্রতিটি লম্বায় 3 সেন্টিমিটার এবং প্রস্থে- 1.5 সেন্টিমিটার হয়। এই ডিম্বাশয় দুটি পেরিটোনিয়াম নামক আবরক দ্বারা আবৃত থাকে।
বয়সভেদে এর অবস্থান ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়। যৌবন শুরু হওয়ার আগে ডিম্বাশব দুটি পৃষ্ঠদেশ বরাবর থাকে। এই সময় এদের গাত্র মসৃণ এবং রঙ ধূসর গোলাপী থাকে। ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি হওয়া শুরু হলে, এর গাত্র অমসৃণ হয়ে যায় এবং রঙ ধূসর গোলাপী থেকে ধূসর বর্ণে রূপ নেয়।ডিম্বাশয় ডিম্বনালীর সাথে একধরণের তন্তুর দ্বারা ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে ডিম্বাশয়ে প্রায় 3-4 লক্ষ প্রিমর্ডিয়াল ফলিকল ( Primordial Folicle ) থাকে। এই ফলিকলগুলো হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে বৃদ্ধি পায়। এদের ভিতরে একটি ফলিকল সবচেয়ে বড় আকার ধারণ করে। একে বলা হয় গ্রাফিয়ান ফলিকল ( Graafian Folicle )। প্রজননের ক্ষেত্রে এই গ্রাফিয়ান ফলিকলই মূখ্য ভূমিকা রাখে।

homeotreatment

🇨🇭 স্ত্রী প্রজননকাল শুরু হয় 13-15 বৎসরের ভিতরে এবং স্থায়ী থাকে 45-50 বৎসর পর্যন্ত। এই সময়ের ভিতরে ডিম্বাশয় থেকে গ্রাফিয়ান ফলিকল উৎপন্ন হয় প্রায় 450 টি। এরপর নারীর প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
ডিম্বাশয় থেকে উৎপন্ন গ্রাফিয়ান ফলিকল ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বনালীতে আসে। এই সময় গ্রাফিয়ান ফলিকল-এর একটি অংশ ডিম্বাশয়ে থেকে যায়। থেকে যাওয়া এই অংশটির রং হলুদ। একে বলা হয় করপাস লুটিয়া ( Corpus Lutia )। এর কোষগুলো ইস্ট্রোজেন ( Estrogen ) এবং প্রোজেস্টেরন ( Progesteron ) নাম দুটো স্ত্রী হরমোন নিঃসরণ করে।

🇨🇭 ইস্ট্রোজেন-এর প্রভাবে ফলে গর্ভকালীন সময়ে নারীর স্তনকে পুষ্ট ও বৃদ্ধি করে। একই সাথে জরায়ুর আকার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। পক্ষান্তরে প্রোজেস্টেরন জরায়ুর ভিতরে ভ্রণের পূর্ণ বিকাশের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে।

🇨🇭 ডিম্বনালী – Fallopian Tube:

স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রাইমেট বর্গের প্রাণীকূলের, স্ত্রীপ্রজনন তন্ত্রের একটি অন্যতম অঙ্গ।
স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রের একটি অংশ। জরায়ু’র উপরের দিকের উভয় পার্শ্ব থেকে দুটি নালী ডিম্বাশয় পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। এই নালী দুটিকে ডিম্বনালী বলা হয়। এদের প্রতিটি লম্বায় প্রায় 10 সেন্টিমিটার হয়। এর একপ্রান্ত জরায়ুর সাথে যুক্ত থাকে। অপর প্রান্ত ডিম্বাশয়ের সাথে যুক্ত থাকে। এই নালী ডিম্বাশয়ের যেখানে যুক্ত হয়, সেখানে অঙ্গুলী-আকৃতির অভিক্ষেপ সৃষ্টি করে। এর ভিতরে বড় অভিক্ষেপটি ডিম্বাশয়ের সাথে যুক্ত থাকে। এই অভিক্ষেপকে বলা হয় ( Overian Fimbriae )। সঙ্গমের পর পুরুষের বীর্য যোনি পথ ধরে জরায়ুতে প্রবেশ করে, এরপর ডিম্বনালীতে অবস্থিত ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়। শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে ভ্রুণের আদি দশায় পৌঁছে। এরপর নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে প্রবেশ করে। এই অবস্থাকে নারীর গর্ভ-সঞ্চার কাল ধরা হয়।

🇨🇭 জরায়ু – Womb, Uterus: স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রাইমেট বর্গের প্রাণীকূলের, স্ত্রী-প্রজনন তন্ত্র এর একটি অন্যতম প্রধান অঙ্গ। মনুষ্য প্রজাতির, নারীদেহে জরায়ু হলো থলিসদৃশ একটি পেশিবহুল অঙ্গ। এর আকৃতি অনেকটা নাশপাতির মতো। স্বাভাবিক অবস্থায় এটি 5 সেন্টিমিটার চওড়া এবং 2.5 সেন্টিমিটার পুরু হয়। এর ওজন প্রায় 30 গ্রাম। এই অঙ্গটি নারীর শ্রোণী-গহ্ববরের ভিতরে দেহের মধ্যরেখা বরাবর মূত্রাশয় এবং মলাশয়ের মধ্যে থাকে।
জরায়ুকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগ দুটো হলো।

🩸 জরায়ুর দেহ ( Uterus Body ): সমগ্র জরায়ুর 2/3 অংশ হলো এর দেহ।

🩸 জরায়ু গ্রীবা ( Uterus Cervix ):
সমগ্র জরায়ুর 1/3 অংশ হলো এর গ্রীবা। পুরু জরায়ু তিনটি স্তরের কোষগুচ্ছ দ্বারা পুরু আবরণ তৈরি করে। এর বাইরের স্তরের নাম পেরিমেট্রিয়াম ( Perimetrium ), মধ্যস্তরের নাম মায়োমেট্রিয়াম ( Myometrium ) এবং ভিতরের স্তরের নাম এন্ডোমেট্রিয়াম ( Endometrium )। এই প্রাচীরের গায়ে তিনটি ছিদ্র আছে। এর দুই পাশের দুটি ছিদ্রের সাথে যুক্ত রয়েছে দুটি ডিম্বনালী। অপর ছিদ্রটি নিচের দিকে অবস্থিত এর সাথে যোনিপথ যুক্ত রয়েছে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু ডিম্বনালীতে অবস্থান করে। সঙ্গমের পর পুরুষের বীর্য যোনি পথ ধরে জরায়ুতে প্রবেশ করে, এরপর ডিম্বনালীতে অবস্থিত ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়। শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে ভ্রুণের আদি দশায় পৌঁছে। এরপর নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে প্রবেশ করে। এই অবস্থাকে নারীর গর্ভ-সঞ্চার কাল ধরা হয়। জরায়ুতে ভ্রূণটি পৌঁছার 4/5 দিনের মধ্যে, জরায়ুর অন্তঃপ্রাচীরের গায়ে যুক্ত হয়ে যায়।

এক্ষেত্রে ভ্রূণ ও জরায়ুগাত্রের মধ্যে কিছু কোষ যুক্ত হয়ে ভ্রূণকে স্থিতি অবস্থায় রাখে। এই সংযুক্ত কোষ-রাশিকে অমরা বা গর্ভফুল বলা হয়। এই গর্ভফূলের দ্বারা ভ্রূণ মাতৃদেহ থেকে খাদ্য পায় এবং ভ্রূণের দেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বেরিয়ে যায়। জরায়ুতে ভ্রূণটি বড় হতে থাকে। ভ্রূণের ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে জরায়ু বৃদ্ধি পায়। ভ্রূণ থেকে মানব শিশুতে পরিণত হতে প্রায় 280 দিন সময় লাগে। এরপর নারী সন্তান প্রসব করে।

🇨🇭 মেয়েদের ঋতুচক্র বা মাসিক
প্রতি চন্দ্রমাস পরপর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে। এর তিনটি অংশ:

  • 🧪 1. টি চারদিন স্থায়ী হয় ( 4/7 দিন ) এবং একে মিনস্ট্রাল ফেজ।
  • 🧪 2 . টি 10 দিন ( 8 -10 দিন) একে প্রলিফারেটিভ ফেজ।
  • 🧪 3. টি 14 দিন ( 10-14 দিন ) স্থায়ী হয়।
হোমিও চিকিৎসা

🇨🇭 আমার এই দুইটি নাম্বার:

   +8801907-583252
   +8801302-743871

( What’s App-হোয়াটসঅ্যাপ এবং Imo-ইমো ) খোলা আছে, চিকিৎসা নিতে চাইলে আমার এই দুইটি নাম্বার ফোনে সেভ করে সমস্যাগুলো লিখে অথবা অডিও রেকর্ড দিয়ে জানাবেন। আমি ফ্রী হয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

🇨🇭 রোগী দেখার সময়:
🛑 সকাল 09:00 — 01:00 টা।
🛑 বিকাল 05:00 রাত 10:00 টা পর্যন্ত।

🇨🇭 চিকিৎসা : সুখবর হচ্ছে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তির উপায়।

🇨🇭 সতর্কতাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঝুকিপূর্ণ।

🇨🇭 ডাঃ মাসুদ হোসেন
Dr. Masud Hossain
(বি, এইচ, এম, এস )
(ডি, এইচ, এম, এস)

☎ 01907-583252 (WhatsApp, IMO)
☎ 01302-743871(WhatsApp, IMO)

[রেজিস্ট্রার প্রাপ্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন
Govt reg No. 35423 ]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার সমস্যা মন খুলে বলুন।
Send via WhatsApp
error: Content is protected !!