ফুসফুসে ইনফেকশন | ডাঃ মাসুদ হোসেন।

ফুসফুসে ইনফেকশন | ডাঃ মাসুদ হোসেন।

🇨🇭 বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীবের মাধ্যমে ফুসফুসের কোষগুলো আক্রান্ত হলে ফুসফুসে ইনফেকশন দেখা দেয়। এইসব অণুজীবের সাথে লড়াই করতে যেয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলো শ্বাসনালীতে প্রদাহের সৃষ্টি করে। যার ফলে ফুসফুসে ইনফেকশনের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

🇨🇭 সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে কাশি, সর্দি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর। এটি ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের কারণে হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফুসফুসের সংক্রমণ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নিউমোনিয়া ফুসফুসের বায়ু থলিকে প্রভাবিত করে, আবার ব্রঙ্কাইটিস বৃহত্তর শ্বাসনালী বা ব্রঙ্কাইকে প্রভাবিত করে। কিছু ক্ষেত্রে, একাধিক ধরনের জীবাণু ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়। উদাহরণস্বরূপ, ভাইরাল ব্রঙ্কাইটিস থেকে ব্যাকটেরিয়াল নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

🇨🇭 ফুসফুসের ইনফেকশন হালকা বা গুরুতর হতে পারে। যে কোনো বয়সী মানুষ এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। সংক্রমণটি শ্বাসনালীর বিভিন্ন অংশে ( যেমন- ব্রঙ্কাই, ব্রঙ্কিওল, অ্যালভিওলি ) বা ফুসফুসের চারপাশের টিস্যুতে ঘটে। আজ আমরা ফুসফুসে ইনফেকশন সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানবো।

🇨🇭 ফুসফুসের সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণ:
যেকোনো প্রকারের ফুসফুসের সংক্রমণ সে যে কারণেই হোক তা নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ সৃষ্টি করে। এর কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। যেমন:

ফুসফুসে ইনফেকশন,ফুসফুস,শ্বাসনালীর ইনফেকশন

🩸 ফুসফুসের ইনফেকশন এর সাধারণ লক্ষণ:

🩸 1. কাশি: শুকনা বা কফ যুক্ত কাশি হতে পারে।

🩸 2. শ্লেষ্মা উৎপাদন: পরিষ্কার বা হলুদ, সবুজ, মরিচা রঙ এর দুর্গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন শ্লেষ্মা দেখা দিতে পারে।

🩸 3. হুইজিং: সাধারণত শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার সময় শ্বাসকষ্ট হয়, শ্বাস ফেলার সময় বুকে ঘর ঘর শব্দও হতে দেখা যায়। শ্বাসের সাথে সাথে বাঁশির মত তীক্ষ্ণ এই শব্দকে হুইজিং বলে। শ্বাসনালী আংশিক বন্ধ থাকলে এরকম শব্দ হতে পারে। এই শব্দ আরো তীক্ষ্ণ হলে এবং শ্বাস নেয়ার সময় হলে তখন তাকে স্ট্রাইডর বলে। ফুসফুসের উপরের অংশে বা শ্বাসনালীতে ইনফেকশন হলে এই শব্দ পাওয়া যায়।

🩸4. জ্বর: হালকা থেকে উচ্চ মাত্রার জ্বর থাকতে পারে।

🩸5. ঠান্ডা ও কাঁপুনি: জ্বর বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে ঠান্ডা ভাব থাকতে পারে বা ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়তে পারে।

🩸6. গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা: শ্বাসতন্ত্রের উপরের দিকে ইনফেকশন হলে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, গলা ব্যথা, গলা বসে যাওয়া, ল্যারিঞ্জাইটিস, মাথা ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

🇨🇭 এ ছাড়াও ফুসফুসের সংক্রমণের অন্যান্য সম্ভাব্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • 🩸 পেশি ব্যথা (মায়ালজিয়া)।
  • 🩸 জয়েন্টে ব্যথা (আর্থ্রালজিয়া)।
  • 🩸 ক্ষুধা মন্দা।
  • 🩸 ক্লান্তি।
  • 🩸 বমি বমি ভাব ও বমি।
  • 🩸 ডায়রিয়া।
  • 🩸 কাশির সাথে রক্ত পড়া, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, ঠোঁট-আঙুল-পায়ের নখে বেগুনী আভা দেখা যাওয়া, হাত পায়ের নখ উল্টানো চামচের মত ফুলে যাওয়া ( ক্লাবিং ) ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • 🩸 ফুসফুসের ইনফেকশন হলে বমি ভাব হতে পারে।

🇨🇭 চিকিৎসকের কাছে কখন যাবেন?

🇨🇭 আপনার যদি ফুসফুসে ইনফেকশন হয়ে থাকে, তবে নির্দিষ্ট লক্ষণ ও উপসর্গগুলোর অর্থ হলো আপনার উন্নত চিকিৎসা ও যত্নের প্রয়োজন। যেমন:

  • 🩸 উচ্চ মাত্রার জ্বর।
  • 🩸 দুই সপ্তাহের বেশি কাশি।
  • 🩸 কাশির সাথে রক্ত বের হওয়া, লালচে বা মরিচা রঙের থুতু বের হওয়া।
  • 🩸 বিশ্রামের সময়েও শ্বাসকষ্ট।
  • 🩸 বুকে ব্যথা।
  • 🩸 দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস।
  • 🩸 ছোট শিশুদের খাবারে অনীহা ও দুর্বলতা।
  • 🩸 শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় বুকের হাড় দেবে যাওয়া।
ফুসফুসে ইনফেকশন,ফুসফুস,শ্বাসনালীর ইনফেকশন

🇨🇭 ফুসফুসে ইনফেকশন এর ধরন:

ফুসফুস ও শ্বাসনালীর ইনফেকশনের উপর ভিত্তি করে এদের কয়েক ধরনে ভাগ করা যায়। যেমন:

🩸1. ব্রঙ্কাইটিস: ব্রঙ্কাইটিস হলো বড় শ্বাসনালী ( ব্রঙ্কাই ) এর একটি সংক্রমণ যা বায়ুনালী ( শ্বাসনালী ) এবং ছোট শ্বাসনালীগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রঙ্কাইটিস সাধারণত ভাইরাল সংক্রমণের কারণে হয়। 01% থেকে 10% ক্ষেত্রে, এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।

🩸2. ব্রঙ্কিওলাইটিস: ব্রঙ্কিওলাইটিস হলো ব্রঙ্কাই এবং ক্ষুদ্র অ্যালভিওলির মধ্যে ছোট শ্বাসনালীগুলির ( ব্রঙ্কিওল ) সংক্রমণ, যেখানে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের বিনিময় ঘটে। ব্রঙ্কিওলাইটিস সাধারণত দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এটি জীবনের প্রথম বছরে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির প্রধান কারণগুলোর একটি। এ ধরনের শিশুদের পরবর্তীতে শ্বাসের সমস্যা বা অ্যাজমা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

🩸3. সাধারণ সর্দি-কাশি: কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ সর্দি কাশিও ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে ফুসফুসে ইনফেকশনের কারণ হয়ে থাকে।

🩸 4. নিউমোনিয়া: নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের এমন এক সংক্রমণ যেখানে ফুসফুসের সবচেয়ে ছোট বায়ুথলীগুলো আক্রান্ত হয়। এটি এমন এক রোগ যা চেষ্টা করলে বাড়িতেই চিকিৎসা করা যায় কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে জীবননাশক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

🩸 5. নানা ধরনের ভাইরাস: এন্টারো ভাইরাস, করোনা ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হুপিং কাশি, যক্ষ্মা ইত্যাদির কারণে ফুসফুসে বিভিন্ন মাত্রার ক্ষতি সাধন হয়।

🇨🇭 কাদের ঝুঁকি বেশি?

  • 🩸 প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ( যারা ধূমপায়ীর আশেপাশে থাকেন )।
  • 🩸 ধূমপায়ী।
  • 🩸 কর্মক্ষেত্রে বায়ু দূষণ বা ধূলিকণার সংস্পর্শে যারা থাকেন।
  • 🩸 যাদের আগে থেকে হাঁপানি বা অ্যালার্জির হিস্ট্রি আছে।
  • 🩸 যারা ঘিঞ্জি এলাকায় বসবাস করেন।
  • 🩸 নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থায় বাস করছেন এমন ব্যক্তি।
  • 🩸 যারা অপুষ্টিতে ভুগছেন।
  • 🩸 জন্মগত হার্ট অথবা ফুসফুসের রোগ আছে এমন যে কেউ।
  • 🩸 সাধারণত 06 বছরের কম বয়সী শিশুরা, কারণ তারা বেশি সংবেদনশীল হয় ( যেমন ব্রঙ্কিওলাইটিস প্রায়শই 02 বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ঘটে )।

🇨🇭 ফুসফুসের রোগ:

ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ ( সিওপিডি ) সিওপিডি বলতে বুঝি একটা মানুষ ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, এমফাইসিমা, ক্রনিক অ্যাজমা এই রোগগুলোতে আলাদাভাবে বা একসঙ্গে ভুগছে।

🇨🇭 ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, এসফাইসিমা এবং ক্রনিক অ্যাজমা প্রতিটাই দীর্ঘস্থায়ী রোগ যার প্রকাশ হলো শ্বাসকষ্ট, বিশেষ করে হাঁটলে শ্বাসকষ্ট অনুভব করা। এ রোগগুলো আলাদাভাবে থাকতে পারে কিন্তু অনেকের এ রোগ ৩টির যে কোনো দুটি বা তিনটা একত্রেও থাকতে পারে।

🇨🇭 সারা বিশ্বে এবং বাংলাদেশে দেখা যায় যেসব মানুষ ধূমপান করত বা করছে অথবা কাঠের চুলার ধোঁয়ার মধ্যে নিয়মিত রান্না করছে তাদের মধ্যে সাধারণত ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস এবং এমফাইসিমা দেখা যায় কিন্তু এ রোগগুলো পরিবেশগত বা বংশগত কারণেও হতে পারে।

🇨🇭 অ্যাজমা বা হাঁপানি অধূমপায়ীদেরও হতে পারে। এগুলো হওয়ার কারণ শুধু পরিবেশগত এলার্জি অথবা বংশগত কারণ নয়। এ ছাড়া আরও একাধিক কারণে অ্যাজমা বা হাঁপানি হতে পারে।

🇨🇭 কিছু সংখ্যক লোকের এমফাইসিমা হয় জন্মগত। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এমফাইসিমা রোগীর রক্তে বায়ুথলি ধ্বংস রক্ষাকারী এনজাইম বা প্রোটিন আলফা-01 এনিট্রিপসিনের ঘাটতি থাকে যাকে বলা হয় আলফা-01 এন্টিট্রিপসিন ডেফিসিয়েন্সি বা শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান ওই এনজাইম না থাকা।

🇨🇭 ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস কী?

🇨🇭 ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস হলো শ্বাসনালির ভেতর কফ তৈরির গ্রন্থি বা গ্র্যান্ডগুলো অতিরিক্ত পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে নিয়মিত বেশি পরিমাণ শ্লেষ্মা বা কফ নির্গত হয়। আর এ অবস্থা সাধারণত ঘটে প্রতিনিয়ত শ্বাসনালিগুলো অতিরিক্ত পরিমাণ ধুলা, ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসা এবং মাঝে মাঝে শ্বাসনালিতে ইনফেকশন হওয়ার কারণে।

🇨🇭 ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস চিহ্নিত করা যায় অথবা নিশ্চিত হওয়া যায় যদি কাশির সঙ্গে নির্গত শ্লেষ্মা বা কফ প্রতিদিন হয় যা কমপক্ষে বছরে 03 মাস বা তার অধিক সময় থাকে এবং এই কফ-কাশি যদি কমপক্ষে দুই বছর পর্যন্ত থাকে তবেই ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বলা যায়।

🇨🇭 ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস সৃষ্টি হলে শ্বাসনালিতে কফের পরিমাণ বেড়ে যায়। সেই রোগীর সকালে সাধারণত খুশখুশি কাশি হয়। কাশির সঙ্গে দৈনিক অল্প বা বেশি কফ নির্গত হয়। এ অবস্থার সঙ্গে বারবার শ্বাসনালিতে ইনফেকশন হয়। অতিরিক্ত কফ বা শ্লেষ্মার কারণে ইনফেকশন হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
ধীরে ধীরে ছোট ছোট শ্বাসনালিগুলো ইনফেকশন এবং শ্লেষ্মার কারণে বন্ধ হতে থাকে। যার কারণে বাতাস শ্বাসনালি দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করা এবং ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

🇨🇭 ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসের কারণে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শ্বাসনালিগুলো সংকুচিত হয় এবং কফ বা শ্লেষ্মা দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে কাশি, কফ এবং হাঁটলে শ্বাসকষ্ট এ উপসর্গগুলো একসঙ্গে বা আলাদা আলাদাভাবে দেখা দেয়। অতিরিক্ত শ্লেষ্মা বা কফ তৈরির কারণে ঘনঘন ইনফেকশন হয়।

🇨🇭 এ শ্বাসনালিগুলো সরু হওয়ার কারণে ফুসফুসে বাতাস প্রবেশ করা এবং বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, যে কারণে শ্বাসকষ্ট হয়।

ডাঃ মাসুদ হোসেন

🇨🇭 এমফাইসিমা কী?

🇨🇭 এমফাইসিমা হলো এমন একটা অবস্থা যেখানে শরীরের বায়ুথলিগুলো ( এলভিউলাই ) স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বড় হয়ে যায় এবং বায়ুথলির মাঝের দেওয়ালগুলো ভেঙে বড় বড় বায়ুথলি তৈরি হয়। এর সঙ্গে ক্ষুদ্র শ্বাসনালিগুলো সরু হয়ে যায় এবং ফুসফুসের স্থিতিস্থাপকতা হারায় অর্থাৎ বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করলে বেলুনের মতো ফুসফুস ফুলে উঠতে পারে না।

🇨🇭 একই কারণে শ্বাস ফেলার সময় বাতাস সহজে ফুসফুস থেকে বের হয় না। এমফাইসিমাতেস্বাভাবিকের অবস্থায় ফোলা বেলুনের মতো ফুসফুস বড় থাকে। এ অবস্থাকে ‘বাতাস আটকে যাওয়া ফুসফুস’ বা ‘হাইপার-ইনফ্লেটেড ফুসফুস’ বলে।

🇨🇭 আটকে যাওয়া বাতাসের কারণে ফুসফুসের আয়তন বড় হয়ে যায়। যেটাকে ব্যারেল চেষ্ট বা ড্রামের মতো বুক বলে এবং ফুসফুসের এ প্রতিনিয়ত এ ড্রামের মতো বেড়ে যাওয়া ফুসফুসে বাতাস ঢুকাতে ও বের করতে অতিরিক্ত পরিশ্রম হয় বিধায় রোগী বসে থাকলে শ্বাসকষ্ট কম অনুভব করে কিন্তু হাঁটলে বা তাড়াহুড়া করলে শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। এটাই সিওপিডির গোড়ার দিকের প্রধান পরিবর্তন।

🇨🇭 আলফা-01 এন্টিট্রিপসিন ডেফিসিয়েন্সি ( অভাব ) কী?

🇨🇭 এটা হলো একটি বংশগত সমস্যা। যেসব মানুষের রক্তে আলফা-01এন্টিট্রিপসিন এনজাইমের ঘাটতি আছে তাদেরই সিওপিডি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আলফা-01 এন্টিট্রাপসিন একটা বিশেষ উপাদান যা রক্তে সব সময় বিদ্যমান থাকে। এটার কাজ হলো ফুসফুসকে ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করা।

🇨🇭 মানুষের ধারাবাহিক জীবনে ফুসফুসের বায়ুথলির জন্য ক্ষতিকর সূক্ষ্ণ পদার্থগুলো প্রতিনিয়তই নিশ্বাসের উপকরণ হিসাবে, যেমন : দূষণকারী বন্তু, জীবাণু, ধুলা-বালি এবং সিগারেটর ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসে। আলফা-01 এন্টিট্রিপসিন ( AA1 ) ফুসফুসের বায়ুথলিকে এসব দূষণকারী জিনিস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

🇨🇭 40 বছরের নিচে কোনো মানুষের সিওপিডি রোগ দেখা দিলে আমরা আলফা-01 এন্টিট্রিপসিন অভাবজনিত কারণ একটি প্রধান কারণ মনে করে থাকি।

🇨🇭 অন্যান্য শ্বাসকষ্ট রোগ:

🇨🇭 সিওপিডির মতো শ্বাসকষ্টজনিত ফুসফুসের আরও কিছু রোগ আছে। চিকিৎসার জন্য প্রতিটা রোগকে আলাদা আলাদাভাবে চিনতে হবে। প্রকাশ শ্বাসকষ্ট হলেও প্রতিটা রোগ আলাদা এবং চিকিৎসাও আলাদা।

ডা. মাসুদ হোসেন -হোমিও চিকিৎসক

🇨🇭 এ রোগগুলোর মধ্যে অ্যাজমা বা হাপানি, ইন্টারস্টিসিয়াল লাং ডিজিজ, ব্রঙ্কিএকটেসিস এই ৩টি রোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কারনে এই 03 রোগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেয়া হলো:

🇨🇭 অ্যাজমা বা হাঁপানি কী?

🇨🇭 অ্যাজমা একটি দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসনালির রোগ যেখানে বিভিন্ন উত্তেজকের প্রভাবে শ্বাসনালিগুলো সংকুচিত হয় এবং শ্বাসনালির ভেতরটা লাল হয়ে ফুলে যায়। এর মূল উত্তেজক বা কারণ হিসাবে ঠান্ডা বাতাস, ফুলের রেণু, ঘরের ধূলায় অবস্থিত মাইট নামক কিট ইত্যাদিকে ধরা হয়।

🇨🇭 শ্বাসনালির ভেতরটা ফুলে যাওয়া এবং শ্বাসনালির পেশিগুলো সংকুচিত হওয়ার কারণে নিশ্বাস ফেলার সময় সাঁই সাঁই শব্দ করা, বুকের ভেতর আটসাট অনুভব করা, শ্বাস নিতে-ফেলতে কষ্ট, অথবা শুকনা কাশি নিয়ে হাঁপানি রোগীরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়।

🇨🇭 হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগীর সংকুচিত শ্বাসনালির মধ্যে বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় যেমনটা হয় সিওপিডির ক্ষেত্রেও। তাই অনেক সময় হাঁপানি থেকে সিওপিডি আলাদা করা কঠিন হয়। কিছু মানুষের সিওপিডি এবং অ্যাজমা দুটিই থাকতে পারে।

🇨🇭 অ্যাজমাকে সবাই রোগ হিসাবেই জানে যেটা কিনা বাচ্চা এবং প্রাপ্ত বয়স্ক যে কারও হতে পারে। অ্যাজমা বা হাঁপানিতে আক্রান্তের সময় শ্বাসনালিগুলোতে প্রদাহ হয় এবং ভেতরটা ফুলে যায়, শ্বাসনালি সংকুচিত হয় এবং শ্লেষ্মা/আঠালো-জাতীয় কফ তৈরির কারণে বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। এ শ্বাস নেওয়ার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় বলে নিশ্বাস নিতে এবং ফেলতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়।

🇨🇭 সিওপিডি এবং অ্যাজমা : সিওপিডি এবং অ্যাজমা-হাঁপানির লক্ষণগুলো-উপসর্গগুলো প্রায় একই রকম হওয়ায় দুটির মধ্যে পার্থক্য করা অনেক সময় মুশকিল হয়ে পড়ে।

🇨🇭 আমরা এটা জানি যে অনেক লোকের সিওপিডি এর সঙ্গে সঙ্গে ক্রনিক হাঁপানি ও থাকে বিশেষ করে যাদের বয়স 50 বছর এর ঊর্ধ্বে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অনেক সিওপিডি রোগীকে হাঁপানির রোগী হিসাবে চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে।

🇨🇭 হাঁপানি এবং সিওপিডি দুটি আলাদা অসুখ এবং সৃষ্টির কারণ ভিন্ন। এ রোগ দুটি শরীরে বিভিন্ন রকম প্রভাব ফেলে এবং এদের চিকিৎসাও তাই কিছুটা ভিন্ন। এ কারণে হাঁপানি, সিওপিডি এ দুটিই সঠিকভাবে নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ। লাং ফাংশন টেস্টের (স্পাইরোমেট্রি) মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় সঠিকভাবে এ দুই রোগকে পার্থক্য করা যায়।

আরো পড়ুনঃ  ফুসফুসজনিত সমস্যার বিস্তারিত তথ্য ও হোমিও চিকিৎসা।
🇨🇭 ব্রঙ্কিএকট্যাসিস কী?

🇨🇭 ব্রঙ্কিএকট্যাসিস হলো ফুসফুসের এমন একটি অসুখ যেখানে শ্বাসনালিগুলোর ভেতরের মাংসের আস্তরণ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে শ্বাসনালিগুলো সব সময় প্রসারিত অবস্থায় থাকে। ফলে শ্বাসনালি ভেতর কতগুলো পকেটের মতো গর্ত সৃষ্টি হয়। এ পকেটগুলোতে প্রচুর পরিমাণ কফ জমা হয় এবং এ জমে থাকা কফে ইনফেকশন হয়। এ ইনফেকশন সাধারণত ভালো হতে চায় না।

🇨🇭 মাঝে মাঝে এ ইনফেকশন থেকে দ্রুত ফুসফুসে ইনফেকশন ছড়িয়ে নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে। আবার মাঝে মাঝে ইনফেকশনের কারণে শ্বাসনালীর গর্তগুলো থেকে রক্তপাত হয় এবং কাশির সঙ্গে টাটকা রক্ত আসতে থাকে। ব্রঙ্কিএকট্যাসিস সাধারণত ধূমপান বা ধোয়া থেকে হয় না এবং এটি সাধারণত ফুসফুসে যক্ষ্মা বা অন্য কোনো গুরুতর ইনফেকশন হওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

🇨🇭 বারবার শ্বাসনালির ইনফেকশনের সঙ্গে সঙ্গে কফের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া ( দৈনিক 1/2 কাপের বেশি কফ নির্গত হওয়া ) এ রোগের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। যেটা পরবর্তিতে কোনো এক সময় দীর্ঘমেয়াদি ইনফেকশন এবং দীর্ঘমেয়াদি কাশিতে পরিবর্তন হয়।

🇨🇭 সাধারণত কফ দেখতে সাদা। যদি এই রং পরিবর্তিত হয়ে যেমন হলুদ, বাদামি, কিংবা সবুজ হয় তাহলে বুঝে নিতে হবে এটা ইনফেকশন। কখনো কখনো ব্রঙ্কিএকট্যাসিস আছে এমন লোকদের কফ বর্ণহীনও হতে পারে যখন তারা ভালো থাকে।

🇨🇭 ব্রঙ্কিএকট্যাসিস-এর মূল চিকিৎসা হল:

🩸1. ফুসফুস থেকে কফ পরিষ্কার করার পদ্ধতি শেখা কফ কমানো এবং বুক থেকে কফ পরিষ্কার করার জন্য দৈনিক ব্যবস্থা গ্রহণ।

🩸2. বারবার ইনফেকশন প্রতিরোধ করা: এটা হলো বিভিন্ন সংক্রমণ রোগের টিকা নেওয়ার মাধ্যমে, ব্যথামুক্তকরণ, শ্বাসের ওষুধ ব্যবহার এবং কখনো কখনো এন্টিবায়োটিকের মাধ্যমে ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণ।

🩸3. ফুসফুস পুনর্বাসন কার্যক্রম: ফুসফুসের শক্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নিয়মিত ফুসফুসের ব্যয়াম করতে থাকা।

হোমিও চিকিৎসায় স্থায়ীভাবে রোগ নির্মূল সম্ভব ?,ডা.মাসুদ হোসেন -হোমিও চিকিৎসক
🇨🇭 ফুসফুসের সংক্রমণ হওয়ার আগে থেকেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা ভাল। কিন্তু করবেন কী করে?

🩸 শিশু থেকে বয়স্ক, সকলেরই শীতের মরসুমে ফুসফুসের সমস্যা বেড়ে যায়। তার উপর যদি ‘সিওপিডি’-র মতো রোগের ইতিহাস থাকে, সে ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে এ কথা এক রকম নিশ্চিত করেই বলা যেতে পারে। এর উপর অনেকেরই ধূমপান করার অভ্যাস থাকে। যা ফুসফুসের জটিলতাকে আরও গুরুতর করে তোলে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে তাই চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই এই মরসুমে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেন। এ ছাড়াও এমন কিছু খাবার আছে, যা ফুসফুসের সংক্রমণ রোধ করতে পারে।

🩸 1. গোলমরিচ:
ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর গোলমরিচ, ফুসফুসের প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে যে সংক্রমণজনিত সমস্যা হয়, তার সঙ্গে মোকাবিলা করতেও সাহায্য করে।

🩸2. হলুদ:
শরীরে যে কোনও রকম সংক্রমণ কমাতে হলুদ অব্যর্থ। হলুদের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ফুসফুসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হলুদে থাকা ‘কারকিউমিন’ ক্যানসার রোধ করে। এমনকি, ক্যানসার দ্রুত ছড়িয়ে পড়াও আটকায়।

🩸3. আদা:
ঠান্ডা লাগলে আদা-চা খেতে নিদান দেন বাড়ির সকলেই। এই আদা হল ফুসফুসের সুরক্ষা কবচ। শুধু ঠান্ডা লাগা নয়, শ্বাসযন্ত্রের যে কোনও সমস্যাতেই আদা প্রাকৃতিক ‘অ্যান্টিবায়োটিক’ হিসাবে কাজ করে।

🩸4. রসুন:
শীত প়ড়ার আগে থেকেই অনেকে সকালে উঠে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেতে শুরু করেন। মনে করেন, রসুন খেলে বোধ হয় গা গরম থাকে। আসলে রসুনের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান ফুসফুসের সংক্রমণ রোধ করতে সাহায্য করে।

🩸5. আখরোট:
ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর আখরোট, শুধু মস্তিষ্কের নয়, ফুসফুসের সংক্রমণও রোধ করতে পারে। পাহাড়ি এই বাদামের প্রদাহ রোধকারী ক্ষমতার গুণেই ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়াতে পারে না।

🩸6. শাক:
টাটকা সবুজ শাক, যে কোনও রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতা জোগায়। তবে ফুসফুসের জন্য আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ভিটামিনে ভরপুর পালং, কালে, বকচয় খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।

🩸7. বার্লি:
ফাইবারে সমৃদ্ধ এই দানাশস্যটি ফুসফুসের জন্য বিশেষ ভাবে উপকারী। আগে জ্বর হলে চিকিৎসকরা ভাতের বদলে বার্লি খাওয়ার নিদান দিতেন। তবে এখন আর শুধু জ্বর হলে নয়, ফুসফুসের সংক্রমণ কমাতেও বার্লির ভূমিকা রয়েছে।

🇨🇭 হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তির উপায়। একজন হোমিও ডাক্তারের/ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। সাইড ইফেক্ট নেই এমন হোমিওপ্যাথি ঔষধ কাজে লাগাবেন। সুস্থ জীবন যাপনের জন্য পরবর্তী ধাপগুলো অর্থাৎ- যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে সুস্থতা অর্জন করতে পারবেন। হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় Homeo হোমিও ওষুধ খান।

🇨🇭 ডাঃ মাসুদ হোসেন।
Dr. Masud Hossain.
( ডি, এইচ, এম, এস ) ঢাকা।
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ( রেজি: নং- 35423 )

🇨🇭 বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড। [ নিবন্ধন নং- Gov.Reg. No. 35423 ] রেজিস্ট্রার প্রাপ্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

🇨🇭 আমার এই দুইটি নাম্বার:

   +8801907-583252
   +8801302-743871

( What’sApp- হোয়াটসঅ্যাপ এবং Imo- ইমো ) খোলা আছে, চিকিৎসা নিতে চাইলে আমার এই দুইটি নাম্বার ফোনে সেভ করে সমস্যাগুলো লিখে অথবা অডিও রেকর্ড দিয়ে জানাবেন। আমি ফ্রী হয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

🛑 অরিজিনাল জার্মানী ঔষধ ও উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান।

🇨🇭 রোগী দেখার সময়:
🛑 বিকাল 05:00 রাত 10:00 টা পর্যন্ত।

🇨🇭 সতর্কতাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঝুকিপূর্ণ।

☎+8801907-583252 (WhatsApp, IMO)।

☎ +8801302-743871 (WhatsApp, IMO)।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার সমস্যা মন খুলে বলুন।
Send via WhatsApp
error: Content is protected !!