সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

🇨🇭 সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) কি ?

🇨🇭 কম্পিউটেড টমোগ্রাফি স্ক্যান সংক্ষেপে সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) নামে পরিচিত। এটি এক প্রকার এক্স-রে। তবে তফাৎ হচ্ছে এক্স-রে এর মত একটি ছবি নেয়া হয় না। এক্স-রে টিউবের আবর্তনের মাধ্যমে অসংখ্য ছবি নেয়া হয়।

🇨🇭 অনেকটা শরীর টুকরো করে প্রস্থচ্ছেদের ছবি নেয়ার মত। পরে ছবিগুলো কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে একত্র করা হয়।

🇨🇭 সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) কেন করা হয়?

🇨🇭 সিটি স্ক্যান করার মাধ্যমে শরীরের ভেতরের নিখুঁত ছবি পাওয়া যায়। ফলে বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষাটি সহায়ক হয়।

🧪 যেসব ক্ষেত্রে সিটি স্ক্যান করা হতে পারে:

  • 🧪 ক্যান্সার বা টিউমার নির্ণয়।
  • 🧪 মস্তিষ্কের রোগ বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে কিনা নির্ণয়।
  • 🧪 হৃদযন্ত্রের কোন রোগ বা রক্ত প্রবাহে কোন বাধা রয়েছে কিনা জানতে।
  • 🧪 ফুসফুসের রোগ নির্ণয়।
  • 🧪 হাড় ভাঙ্গা বা অন্য কোন সমস্যা নির্ণয়।
  • 🧪 কিডনী বা মূত্রসংবহন তন্ত্রের কোন রোগ বা পাথর সনাক্ত করণ।
  • 🧪 পিত্তথলি, লিভার বা অগ্নাশয়ের রোগ নির্ণয়।
  • 🧪 বায়োপসি করার ক্ষেত্রে গাইড হিসেবে সিটি স্ক্যানের সাহায্য নেয়া হতে পারে।
  • 🧪 ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সারের বিস্তৃতি সম্পর্কে জানতে সিটি স্ক্যান করা হয়।
  • 🧪 এছাড়া যেসব রোগীকে পেস মেকার, ভাল্ভ বা এ জাতীয় যন্ত্র দেয়া হয়েছে তাদের এমআরআই করা যায় না, এ কারণে সিটি স্ক্যান করতে হয়।
সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

🇨🇭 যেভাবে সিটি স্ক্যান করা হয় :

🇨🇭 সিটি স্ক্যান ব্যাথামুক্ত পরীক্ষা। সিটি স্ক্যান টেবিলে রোগীকে শুইয়ে টেবিলটি বৃত্তাকার একটি স্ক্যানারের মধ্যে নেয়া হয়, যেখানে এক্স-রে টিউব ও সেন্সর থাকে। টিউব ও সেন্সর দ্রুত ঘুরতে থাকে, তবে এটি বাইরে থেকে দেখা যায় না। ভালো ছবি পাওয়ার জন্য কন্ট্রাস্ট ম্যাটেরিয়াল দরকার হতে পারে। এটা ইনজেকশন হিসেবে শিরায় দেয়া হতে পারে আবার রোগীকে পান করতেও দেয়া হতে পারে। এসময় রোগীকে নড়াচড়া করতে বারণ করা হয়। ইন্টারকমের মাধ্যমে বাইরে থেকে রোগীর সাথে যোগাযোগ রাখা হয়। একটি স্বচ্ছ জানালা দিয়ে রোগীর ওপর নজর রাখা হয়।

🇨🇭 বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞানের যে উদ্ভাবনগুলি রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে কম্পিউটেড টমোগ্রাফি বা ( CT Scan ) সিটি স্ক্যান এগুলোর অন্যতম। 1972- সালের এপ্রিল মাসে ব্রিটিশ ইনস্টিটিউট অব রেডিওলজির বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ব্রিটিশ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র গডফ্রে হাউন্সফিল্ড সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে ত্রিমাত্রিক এক্স রে ইমেজ তৈরি করার প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের ঘোষণা দেন। তিনি নিজের উদ্ভাবিত পদ্ধতির নাম দিয়েছিলেন কম্পিউটারাইজড অ্যাক্সিয়েল ট্রান্সভার্স স্ক্যানিং বা ক্যাট স্ক্যানিং।

🇨🇭 এক্স-রে,র ( X-ray ) মাধ্যমে মানুষের শরীরের ভেতরের যেসব ছবি তোলা হয়, সেগুলি সব দ্বিমাত্রিক। তাতে শরীরের ত্রিমাত্রিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের একটা সামগ্রিক দ্বিমাত্রিক চিত্র পাওয়া যায়, তবে তা সম্পূর্ণ চিত্র নয়। যেমন- একজন রোগীর ফুসফুসের এক্স-রে দেখে ডাক্তার বুঝতে পারেন সেখানে কোন অস্বাভাবিকতা রয়েছে কি না। কিন্তু ফুসফুসের ঠিক কোন গভীরতায় অস্বাভাবিকতা আছে, তা একটিমাত্র চিত্র থেকে বোঝা যায় না। যেমন একটা বইয়ের শুধুমাত্র প্রচ্ছদের ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই বইটি কত মোটা।

🇨🇭 হাউন্সফিল্ড যে পদ্ধতিতে এক্স-রে চিত্র তৈরি করলেন, তা প্রচলিত এক্স-রে চিত্রের চেয়ে আলাদা। প্রচলিত পদ্ধতিতে রোগীর একটি এক্স-রে তৈরির জন্য একদিক থেকে এক্স-রে প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু সিটিতে রোগীর চারদিক থেকে এক্স-রে প্রয়োগ করে অনেকগুলি ছবি একসাথে তোলে, সেই ছবিগুলো থেকে কম্পিউটারের মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়। কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে এই প্রযুক্তি সরাসরি যুক্ত। তাই এই প্রযুক্তির নাম কম্পিউটেড টমোগ্রাফি। গ্রিক শব্দ ( টমোস ) অর্থ স্লাইস বা ফালি। এই পদ্ধতিতে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে এক্স-রের ( X-ray ) মাধ্যমে ফালি ফালি করে দেখা হয়। তারপর সবগুলি ফালির ছবি এক সাথে জোড়া দিয়ে ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়।

🇨🇭 পুরো প্রক্রিয়াটিতে খুবই উচ্চমাত্রার জটিল গাণিতিক সমীকরণ ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটারের সফটওয়ার খুব সহজেই এই জটিল গণিতের সমাধান করতে পারে। কম্পিউটারের মাধ্যমে সবকিছু করা হয় বলে এই পদ্ধতির বেশ কয়েকটি নাম আছে। যেমন কম্পিউটারাইজড অ্যাক্সিয়েল টমোগ্রাফি বা ক্যাট, কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি, কিংবা কম্পিউটেড টমোগ্রাফি। বর্তমানে সার্বিকভাবে কম্পিউটেড টমোগ্রাফি বা সিটি নামটাই ব্যবহৃত হয়।

🇨🇭 টমোগ্রাফিক পদ্ধতি হঠাৎ করে একদিনে উদ্ভাবিত হয়নি। হাউন্সফিল্ডের উদ্ভাবনের পঞ্চাশ বছরেরও বেশি আগে 1917- সালে অস্ট্রিয়ান গণিতবিদ ইয়োহান র‍্যাডন প্রমাণ করেন যে দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক কোন বস্তুর অসীম সংখ্যক প্রজেকশান ( বা ফালি ) থেকে গাণিতিকভাবে বস্তুটিকে পুনর্নির্মাণ করা যায়। পদার্থবিজ্ঞানীদের অনেকেই নিজের নিজের ক্ষেত্রে এই পুনর্নির্মাণের প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন বছরের পর বছর। অস্ট্রেলিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী রোনাল্ড ব্রেসওয়েল বেতার, জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে – 1956 সালে একটি সৌরম্যাপ তৈরি করেছিলেন।

সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

🇨🇭 1961- সালে নরম টিস্যুর ত্রিমাত্রিক ইমেজিংয়ের মডেল তৈরি করেছিলেন মার্কিন নিউরোলজিস্ট উইলিয়াম হেনরি ওলডেনডর্ফ।

🇨🇭 1963- সালে দক্ষিণ আফ্রিকান-মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী অ্যালান কোরম্যাক টমোগ্রাফির তত্ত্ব এবং ইমেজিংয়ের জন্য দরকারি গাণিতিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তাঁর এই তত্ত্ব এবং গাণিতিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে গডফ্রে হাউন্সফিল্ড উদ্ভাবন করেন কম্পিউটেড টমোগ্রাফি। সিটি উদ্ভাবনের জন্য গডফ্রে হাউন্সফিল্ড ও অ্যালান কোরম্যাক যৌথভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান 1979 সালে।

🇨🇭 এক্স-রে X-ray, রেডিওগ্রাফির সাথে সিটির আরেকটি প্রধান পার্থক্য হলো সিটির হাউন্সফিল্ড নাম্বার বা সিটি নাম্বার। শরীরের রক্ত, চর্বি, পেশী, ফুসফুস ইত্যাদির ঘনত্ব খুবই কাছাকাছি। এগুলি প্রায় একই পরিমাণ এক্স-রে শোষণ করে এবং তাই এক্স-রে রেডিওগ্রাফ দেখে এদেরকে পরস্পর থেকে আলাদা করা যায় না। তাই রোগীর শরীরে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে তা আসলে কোন জায়গায় তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এই সমস্যার সমাধানে হাউন্সফিল্ড সিটি নাম্বার প্রচলন করলেন, যেখানে তিনি শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ঘনত্বের একটা তুলনামূলক নাম্বার দিয়েছেন পানির সাথে তুলনা করে।

🇨🇭 পানির সিটি নম্বর ধরা হলো শূন্য। পানির চেয়ে ঘনত্ব যাদের যত বেশি তাদের নম্বর হবে ততো বেশি পজিটিভ নাম্বার। যেমন, টিউমার +5 থেকে +35, মাংসপেশী +50, শক্ত হাড় +1000, আবার যাদের ঘনত্ব পানির ঘনত্বের চেয়ে যত কম তাদের নম্বর হবে ততো নেগেটিভ নাম্বার। যেমন- বাতাস -1000, ফুসফুস -150 থেকে -400, চর্বি -100, সিটি ইমেজ পুনর্নির্মাণের সময় সুনির্দিষ্ট সিটি নাম্বারের প্রয়োগ করা হয়, ফলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রতিটি উপাদান স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

আরো পড়ুনঃ  হার্ণিয়েটেড ডিস্ক | Herniated Disk | ডাঃ মাসুদ হোসেন।

🇨🇭 উদ্ভাবনের পর থেকে কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে সিটি সিস্টেমও অনেক উন্নত হয়েছে। 1973 থেকে 2015 সালের মধ্যে সপ্তম প্রজন্মের সিটি মেশিন উদ্ভাবিত হয়ে গেছে। এখন এই অত্যাধুনিক সিটি মেশিনের সাহায্যে কিছু কিছু জটিল রোগনির্ণয় অনেক সহজ হয়ে গেছে। ক্যানসার টিউমার শনাক্তকরণ ছাড়াও টিউমারের আকার, আকৃতি ও অবস্থান নির্ণয় করে রেডিওথেরাপির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান তৈরি করার জন্য রোগীর সিটি স্ক্যান করা হয়।

🇨🇭 সিটি স্ক্যানারে এক্স-রে টিউব থেকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এক্স-রে তৈরি হয়। কিন্তু এক্স-রে টিউবটি একটি বৃত্তাকার পথে ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরতে পারে। বৃত্তাকার পথে অনেকগুলি ডিজিটাল ডিটেক্টর লাগানো থাকে। এক্স-রে টিউবের যে কোন অবস্থান থেকেই এই ডিজিটাল ডিটেক্টরগুলি এক্স-রে ডিটেক্ট করতে পারে। সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) করার সময় রোগীকে যে বিছানায় শোয়ানো হয়, সেই বেডটিসহ রোগীকে সিটি মেশিনের মাঝখানের বড় বৃত্তাকার পথে ঢুকিয়ে দেয়া যায়। তারপর পরিকল্পনা অনুযায়ী এক্স-রে প্রয়োগ করা হয়। এক্স-রে টিউব রোগীর চারপাশে বৃত্তাকার পথে ঘুরতে ঘুরতে রোগীর শরীরে এক্স-রে প্রয়োগ করে। এই এক্স-রে রোগীর শরীর ভেদ করে বিপরীত দিকের ডিটেক্টরে গিয়ে পড়ে। ডিটেক্টর এক্স-রে থেকে রোগীর শরীরের উপাদানের তথ্য আলাদা করে কম্পিউটারের সফটওয়ারে পাঠায় প্রসেসিংয়ের জন্য। রোগীর চারপাশের সবগুলি ডিটেক্টরের পাঠানো তথ্য থেকে কম্পিউটার ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করে। সবগুলি প্রজেকশান একের পর এক যোগ করে এক সাথে ভিডিও ফরম্যাটে উপস্থাপন করা হয় রোগীর সিটি রিপোর্ট।

ডা.মাসুদ হোসেন -হোমিও চিকিৎসক
ডা.মাসুদ হোসেন -হোমিও চিকিৎসক

🇨🇭 সিটি স্ক্যানিংয়ে ( CT Scan ) রোগীর শরীরে জেনারেল রেডিওগ্রাফির চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে রেডিয়েশন প্রবেশ করে। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন, সিটি স্ক্যানিং থেকে যে রেডিয়েশন শরীরে প্রবেশ করে তা শরীরে ক্যানসারের সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই খুব বেশি দরকার না হলে সিটি স্ক্যান ( CT Scan ) করার পরামর্শ দেয়া উচিত নয়।

🇨🇭 ডাঃ মাসুদ হোসেন।
Dr. Masud Hossain.
( বি, এইচ, এম, এস )
( ডি, এইচ, এম, এস ) ঢাকা।

🇨🇭 বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড। [ নিবন্ধন নং- Gov.Reg. No. 35423 ] রেজিস্ট্রার প্রাপ্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

📞 মোবাইল : +8801907-583252
+8801302-743871

🇨🇭 আমার এই দুইটি নাম্বার:

   +8801907-583252
   +8801302-743871

( What’sApp- হোয়াটসঅ্যাপ এবং Imo- ইমো ) খোলা আছে, চিকিৎসা নিতে চাইলে আমার এই দুইটি নাম্বার ফোনে সেভ করে সমস্যাগুলো লিখে অথবা অডিও রেকর্ড দিয়ে জানাবেন। আমি ফ্রী হয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

🛑 অরিজিনাল জার্মানী ঔষধ ও উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান।

🇨🇭 রোগী দেখার সময়:
🛑 বিকাল 05:00 রাত 10:00 টা পর্যন্ত।

🇨🇭 চিকিৎসা : সুখবর হচ্ছে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তির উপায়।

🇨🇭 সতর্কতাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঝুকিপূর্ণ।

☎+8801907-583252 (WhatsApp, IMO)।

☎ +8801302-743871 (WhatsApp, IMO)।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার সমস্যা মন খুলে বলুন।
Send via WhatsApp
error: Content is protected !!