স্পন্ডাইলোসিস কি?
স্পন্ডাইলোসিস একটা ব্যাধি যার কারণে হাড়ে এবং সাথে কোমলাস্থি এবং ডিস্কেও পরিবর্তন হয়। সময়ের সাথে স্পন্ডাইলোসিসের ফলে মেরুদন্ডের টিসু (ডিস্ক) যেটা মেরুদন্ডের (ভার্টিব্রা) হাড়কে আসনের মতো ঢেকে রাখে সেটা ভেঙে যায়। শেষপর্যন্ত স্পন্ডাইলোসিস ফলে মেরুদন্ড শক্ত হয়ে যায় বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস হয়। বিশেষ করে এটা ঘাড়ের ভার্টিব্রাকে এবং পিঠের নিম্নভাগে, মানে, লাম্বার এলাকাকে আক্রমণ করে।
⛑️ এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
⛑️ স্পন্ডাইলোসিসের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি এর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে:
⛑️লাম্বার_স্পন্ডাইলোসিস:
- ভোরবেলায় পিঠে শক্তভাব ও পিঠে ব্যথা।
- অনেকক্ষণ বসে থাকলে ব্যথা।
- ঝুঁকলে বা কিছু জিনিস তুললে ব্যথা।
⛑️সার্ভাইকাল স্পন্ডাইলোসিস:
- মাথার পিছনদিকে মাথা ব্যথা।
- পায়ে ও বাহুতে দূর্বলতা ও অসাড়তা।
- ঘাড়ে শক্তভাব।
- ভারসাম্যের অভাব।
- ঘাড়ে ব্যথা যেটা কাঁধের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
- পায়ে বা কাঁধে অস্বাভাবিক অনুভুতি।
- প্রস্রাব ও পায়খানা নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা।
⛑️ থোরাসিক স্পন্ডাইলোসিস:
পিছনে ঝুঁকলে পিঠের মাঝখানে ব্যথার অনুভুতি।
যখন মেরুদন্ড সামনে ও পিছনে নাড়ানো হয় তখন ব্যথা।
⛑️ এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
⛑️স্পন্ডাইলোসিসের প্রধান কারণগুলো হলো:
- বয়স বৃদ্ধি।
- অতীতে কোনো ঘাড়ে চোট, যেমন মোটর দূর্ঘটনায়
- আঘাত পাওয়া।
- প্রচন্ড আর্থ্রাইটিস।
- অতীতে মেরুদন্ডে আঘাত পাওয়া।
এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
⛑️নিম্নলিখিত উপায়ে স্পন্ডাইলোসিসের নির্ণয় করা হয়:
বিশদ ইতিহাস এবং পিঠ ও ঘাড়ের নমনীয়তা দেখার জন্য শারীরীক পরীক্ষা।
হাঁটা লক্ষ করা।
পা, বাহু এবং হাতের শক্তি ও প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা।
দরকার পড়লে এক্স-রে, এম আর আই বা সিটি স্ক্যান করা হয়।
⛑️সায়াটিকা একটা বেদনাদায়ক অবস্থার প্রতি নির্দেশ করে যা শরীরে সায়াটিক নার্ভ-এ (স্নায়ু) কোনও আঘাতের দ্বারা সৃষ্ট হয়। উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে একটা অসাড় অবস্থার অনুষঙ্গী হয়ে পিঠের নীচের অংশে ব্যথা যা একটা পা বেয়ে নীচের দিকে বিকীর্ণ হয়। এটা প্রধানত: দু’ধরণের – স্নায়ুতান্ত্রিক ব্যথা (নিউরোজেনিক পেইন) এবং প্রতিফলিত ব্যথা (রেফার্ড পেইন)। উপসর্গগুলি আচমকা প্রকাশ পায় এবং অত্যন্ত অসুখকর হতে পারে। কয়েকটি বিষয় থাকতে পারে যা সায়াটিকার দিকে চালিত করতে পারে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, সায়াটিকা কোনও পিঠের আঘাত অথবা দীর্ঘকালীন নিষ্ক্রিয়তার সাথে যুক্ত থাকতে পারে। অন্যান্য কারণগুলির অন্তর্ভুক্ত হল বেঠিক দেহভঙ্গী, স্থূলতা (মোটা হওয়া), স্নায়ুতাত্ত্বিক ব্যাধি, স্পন্ডিলাইটিস, স্লিপড ডিস্ক, এবং পেশীর খিঁচুনি। সায়াটিকা 4-6 দিনের মধ্যে নিজের থেকেই সেরে যায় কিন্তু যদি উপসর্গগুলি অবিরত লেগে থাকে তখন মেডিক্যাল হস্তক্ষেপ দরকার হয়। সায়াটিকা ব্যথা-উপশমকারী ওষুধ, ম্যাসাজ, দ্বারা নিরাময় করা যেতে পারে।
সায়াটিকার উপসর্গগুলি কয়েকটি জীবনধারা পরিবর্তন অন্তর্ভুক্ত করার দ্বারা কার্যকরভাবে সামলানো যেতে পারে। যাই হোক, যদি উপসর্গগুলি ভাল হবার পর আবার খারাপের দিকে যায় চিকিৎসাগত পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি। অধিকন্তু, যদি চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয়, সায়াটিকা জটিলতায় পর্যবসিত হতে পারে যেমন বর্ধিত ব্যথা এবং চিরস্থায়ী স্নায়ুক্ষতি।
আরো পড়ুনঃ পুরুষের লিঙ্গ চুপষে যাওয়া বা পেনাইল অ্যাট্রোফির হোমিও চিকিৎসা।
⛑️সায়াটিকা এর উপসর্গ :
সায়াটিকার সবচেয়ে বেশি করে জ্ঞাপিত উপসর্গগুলির অন্তর্ভুক্ত
- পিঠের নীচের অংশে
- নিতম্বের হাড়ে
- পায়ের পিছনে
এবং নিতম্বের দুটো গোলাকার মাংসল অংশে (বাটক) ব্যথা। - পাগুলিতে জ্বলুনির সংবেদন।
একটা পা বা পায়ের পাতায় ঘন ঘন অসাড়তা। - একটা পায়ে দুর্বলতা।
- নীচের দিকে বিকীর্ণ হওয়া ব্যথা।
- পা অথবা পায়ের পাতা নড়াচড়ায়, দাঁড়িয়ে থাকায় অথবা হাঁটায় অসুবিধা।
- পায়ের পাতাগুলিতে যন্ত্রণাদায়ক সংবেদন যা নড়াচড়ায় ব্যাঘাত করে।
⛑️কিছু উপসর্গ হতে পারে যেগুলির অবিলম্বে চিকিৎসাগত মনোযোগ প্রয়োজন। এগুলির মধ্যে রয়েছে:
পাগুলিতে দীর্ঘকালীন অসাড়তা।
মূত্রত্যাগ এবং মলত্যাগে নিয়ন্ত্রণ হারানো।
পায়ে দুর্বলতা।
চলাফেরা করার চেষ্টা করলে ব্যথা।
সায়াটিকার উপসর্গগুলি বেশির ভাগ যুক্ত সীমিত সক্রিয়তা এবং একটা খোঁচা বা জ্বলনের সংবেদন সহ গুরুতর ব্যথা যা পিঠ, পা, এবং পায়ের পাতাসহ শরীরের নীচের অংশে কয়েক মিনিটের মধ্যে চলে যায়।
যাই হোক, সায়াটিকার উপসর্গগুলি স্যাক্রাম বা ত্রিকাস্থিগত জোড়ের (শিরদাঁড়ার মূলদেশের তেকোণা হাড়) ত্রুটিপূর্ণ ক্রিয়ার মত একটা অবস্থার অনুরূপ হতে পারে। গর্ভাবস্থার মত অবস্থাগুলিতে পিঠের নীচের অংশে ব্যথা অনুভব করা হতে পারে। সেজন্য, যখন এধরণের উপসর্গের অভিজ্ঞতা হয়, অন্যান্য অবস্থার সম্ভাবনা খারিজ করার জন্য একটা যথাযথ রোগলক্ষণ নির্ণয় সুনিশ্চিত করতে একটা পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
⛑️যদি সায়াটিকা 4-6 সপ্তাহের মধ্যে নিজে থেকে ঠিক না হয়, চিকিৎসাগত হস্তক্ষেপ দরকার হতে পারে।
🇨🇭Avascular Necrosis বা এভিএন কি ?
⛑️Avascular Necrosis (AVN) হলো রক্তপ্রবাহের স্বল্পতার কারনে হাড়ের তরুনাস্থি ও জোড়ার ক্ষয়। ইহা অস্টিও নেকরোসিস বা এসেপটিক নেকরোসিস বা ইসকেমিক নেকরোসিস নামেও পরিচিত। হাড় যেহেতু জীবন্ত কোষ দিয়ে তৈরী তাই হাড়ের পুষ্টির জন্য রক্ত সরবরাহ একান্ত প্রয়োজন। হাড়ে রক্ত সরবরাহ কমে গেলে পুষ্টির অভাবে হাড়ের কোষের মৃত্যু হয়। যদি হাড়ের এই রক্ত প্রবাহের স্বল্পতা দ্রুত গতিতে থামানো না যায় বা রক্ত প্রবাহ পুনরায় বাড়ানো না যায় তবে ধীরে ধীরে হাড় ভেঙ্গে যেতে থাকে। সাধারণত উরুর উপরের অংশের হাড়ে (Femoral Head) এ ধরনের ক্ষয় দেখা যায়। এছাড়াও হাটু, গোড়ালীর হাড়ে এভাসকুলার নেকরোসিস হয়ে থাকে।
🛑Avascular Necrosis হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা :
- 🌡️ Silicea
- 🌡️Nat-Sulphur
- 🌡️ Acid flour
- 🌡️ Syphilinum
- 🌡️ Aurum Met
- 🌡️Symphytum
- 🌡️ Ruta
- 🌡️ Rustox
- 🌡️ Echimacea Q
- 🌡️ Belladonna Q
- 🌡️ Urtica Urens .. Etc.
⛑️ LVDP বা PLID বা ডিস্ক প্রলাপ্স জনিত কোমর ব্যথা ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা:
সাধারনত আমাদের মেরুদন্ডের নিচের দিকে ব্যথা হলে আমরা এটাকে কোমর ব্যথা বলে থাকি। কোমর ব্যথা অনেক কারনে হয়। তবে মেরুদন্ডের দুই হাড়ের মাঝখান থেকে ডিস্ক বের হয়ে যে কোমর ব্যথা হয়ে থাকে, সেটাকে ডিস্ক প্রলাপস জনিত কোমর ব্যথা বা PLID বা LVDP জনিত কোমর ব্যথা বলা হয়৷ অধিকাংশ সময় এই ডিস্ক প্রলাপসের কোমর ব্যথা সায়াটিক নার্ভ দিয়ে পায়ের দিকে চলে যায়৷ যেটাকে সায়াটিকার ব্যথাও বলা হয়।
⛑️PLID মানে Prolapse Lumbar Intervertebral Disc আর LVDP মানে Lumbar Vertrebral Disc Prolapse. অর্থাৎ আমাদের পিঠ বা কোমর অনেকগুলো ছোট ছোট হাড় নিয়ে গঠিত, যাকে আমরা কশেরুকা বা ভার্টিব্রা বলি। এই ভার্টিব্রাগুলোর মাঝখানে ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক থাকে, যার চারদিকে একধরনের ইলাস্টিকের মত কার্টিলেজ থাকে, এর ভিতরে টুথপেস্ট বা জেল এর মত নরম এক ধরনের পদার্থ থাকে।
⛑️অনেক সময় বিভিন্ন আঘাতজনিত কারনে জেল এর পদার্থটি ইলাস্টিকের উপর চাপ দেয়, ফলে ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক বের হয়ে এসে নার্ভে চাপ দেয়। কোমরে পায়ে ব্যথা হয়, পা ঝিন ঝিন করে, অবশ অবশ লাগে৷ অনেক সময় এই ব্যথা কোমরে না থেকে সরাসরি পায়ে চলে যায়। অধিকাংশ ডিস্ক প্রলাপ্স L4- L5 বা L5- S1 এ হয়ে থাকে। বয়স জনিত কারণে অনেক সময় অনেকগুলো ভার্টিব্রাল জয়েন্টে এক সাথে ডিস্ক প্রলাপ্স হয়ে থাকে।
⛑️মাঝে মাঝে দেখা যায় অনেক রোগীর কোমর বাঁকা হয়ে যেকোনো একদিকে সরে গেছে, এটাকে আমরা Lateral shift বলে থাকি৷ যদি কারো কোমর বাঁকা ( shift) হয়ে যায়। তবে এই বাঁকা কোমর সোজা না হলে অর্থাৎ শিফট কারেকশন না হলে ব্যথা ভাল হবে না।
⛑️এছাড়া বয়সজনিত কারণে বর্ধিত হাড় বা অস্টিওফাইটস নার্ভে চাপ দেয় এতেও কোমর ব্যথা হতে পারে এবং ব্যথা পায়ে চলে যেতে পারে৷ এছাড়া স্পাইনাল ক্যানেল স্টেনোসিসের জন্য কোমর ও পায়ে এক সাথে ব্যথা হতে পারে। তাই রোগীর সব কথা শুনে বুঝে রোগ নির্নয় করে চিকিৎসা দেওয়া উচিত।
⛑️কোমর ব্যথার জন্য সবোত্তম চিকিৎসা হল হোমিওপ্যাথি
। অনেকেই হঠাৎ করেই সার্জারির মত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। তাই খরচ কমানো এবং রোগীদের হয়রানির হয়রানীর হাত থেকে বাচার জন্য সবোত্তম চিকিৎসা হল হোমিওপ্যাথি৷
আমি মনে করি আমাদের দেশের ক্ষেত্রেও সার্জারির করার আগে অবশ্যই একজন হোমিওপ্যাথের পরামর্শ নিন।
⛑️অনেকে SWD, UST, TRACTION নিয়ে থাকেন । এই গুলো কোমর ব্যথার সঠিক চিকিৎসা না। একজন হোমিওপ্যাথ চিকিৎসকের হাতই পারে আপনাকে অপারেশন ছাড়া PLID এর সমস্যা থেকে মুক্ত করতে। ২ সপ্তাহ থেকে ১ মাসের মধ্যেই অধিকাংশ PLID জনিত কোমর ব্যথা সম্পূর্নভাবে ভাল হয়ে যায় । তাই কোমর ব্যথার রোগীদের বলব, অযথা হতাশার দরকার নেই। সঠিকভাবে চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন।
🛑🚨তবে এটাও সত্য অধিকাংশ ক্রনিক কোমর ব্যথা করা অনেক কঠিন ৷ ভাল হতে সময় লাগে৷ অনেক সময় কিছুটা ব্যথা থেকে যায়৷ যেটাকে আস্তে আস্তে নিজে নিজে সলভ করে নিতে হয়৷
🛑🚨ডায়াবেটিস,হার্ট অ্যাটাক,স্থুলতা বা অতি ওজন, ক্যান্সার, ব্রেন স্ট্রোক, ফ্যাটি লিভার , কিডনি ড্যামেজ , উচ্চ রক্ত চাপ , গ্যাসট্রিক আলসার , সন্তান না হওয়া, থাইরয়েডের সমস্যা ,হরমোন জনিত সমস্যা, যৌন সমস্যা ইত্যাদি রোগের অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক ।
🛑🚨যে কোন ধরনের পরামর্শ ও চিকিৎসার যোগাযোগ করুন : হোমিওপ্যাথিক দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তির উপায়
আপনি চিকিৎসা নিতে চাইলে আপনার রোগের লক্ষণ সমূহ ও প্রয়োজনীয় রিপোর্ট সমূহ দিতে পারেন। আমি ফ্রী হয়ে উত্তর দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
আমার একটি গ্ৰুপ আছে।গ্ৰুপটির লিংক নিচে দেওয়া আছে। আপনি আপনার রোগের বিস্তারিত জানতে ও নতুন নতুন রোগের তথ্য পেতে দয়া করে আমার গ্ৰুপটিতে জয়েন্ট করুন।
সরাসরি কথা বলতে চাইলে আমার মোবাইলে কল করুন এই নাম্বারে (০১৯০৭-৫৮৩২৫২)
⛑️Dr. Masud Hossain 01907-583252
☎️ মোবাইল নাম্বার- +8801907-583252 , +8801302-743871