🇨🇭 পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকায় চিকিৎসা বিজ্ঞানে আল্ট্রাসনোগ্রামের ( Ultrasonography ) ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগ নির্ণয়ে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা। সেক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আল্ট্রাসাউন্ড একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। Emergency Diagnosis – এর ক্ষেত্রে যেমন সাহায্য করছে তেমনি Treatment – এর ক্ষেত্রেও গুরুত্বের সহিত ব্যবহার হচ্ছে।
🇨🇭 Medical Ultrasound দুই ভাবে ব্যবহার হয়:
- Diagnostic Medical Ultrasound – রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে।
- Therapeutic Medical Ultrasound – চিকিৎসা ক্ষেত্রে।
🇨🇭 Medical Ultrasonography – চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে শাখাগুলো এখন নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে:
- Anesthesiology: একজন Anesthesiologist স্থানিকভাবে কোন অর্গাণের অবেদনশীল করতে যে Anesthetic Solutions নার্ভের কাছে ইনজেকশন করছেন আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার সেটা আরও সহজ করেছে। তাছাড়াও বিভিন্ন -:Arterial এবং Central Venous Cannulation – এর ক্ষেত্রে ব্যবহার এবং একজন Neuro-Anesthesiologist ট্রান্সক্রানিয়াল ড্রপলার ( Transcranial Doppler ) ব্যবহার করে Basal Cerebral Vessels -vএর Flow-Velocity সম্পর্কে সহজেই বুঝতে পারছেন।
- Angiology: শরীরের যেকোন শিরা ও ধমনীর রোগ নির্ণয়ে Duplex Ultrasound ( Doppler Flow Measurement ) প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হচ্ছে।
- Cardiology: Echocardiography একজন Cardiologist – এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এটার মাধ্যমে সহজেই হার্টের কোন অংশ Dilatation অথবা Ventricles এবং Vulve সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা বুঝা যায়। আর এরজন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে আল্ট্রাসনোগ্রাফী।
- Emergency Medicine: Emergency Department – এ আল্ট্রাসনোগ্রাফী একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ কোন Accidental Case যেমন: Peritoneal Trauma অথবা Tear of IVC ( Inferior Venacava ) দ্রুত সিদ্ধান্ত- চিকিৎসা নিতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি সাহায্য করছে।
- Gastroenterology/Colorectal Surgery: পেটের পরীক্ষায় আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার প্রায় সকলেরই জানা। এটা এত ব্যবহার হচ্ছে যে কোন ধরনের পেটের সমস্যায় প্রায় চিকিৎসক খুব সহজেই একটা আল্ট্রা করে নেন। অগ্নাশয়, লিভার, পিত্তথলী, পিত্তনালী, কিডনী, মূত্রথলী, প্লীহার অবস্থান ও রোগ সম্পর্কে জানতে আল্ট্রাসনোগ্রাফী ( Ultrasonography ) খুবই কার্যকরী পরীক্ষা। তাছাড়া এপেন্ডিসাইটিসও নির্ণয় করা যায়। বর্তমানে (;Colorectal Surgeon ) কিছু কিছু অপারেশনে আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করছেন।
- Head & Neck /Otolaryngology: গুরুত্বপূর্ণ গ্ল্যান্ড যেমন: Thyroid, Parathyroid, Lympnodes, Salivary Glands , সম্পর্কে জানতে আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার হয়। থাইরয়েডের টিউমার-সিস্ট, থাইরয়েড ক্যানসার এবং FNAC পরীক্ষায় আল্ট্রাসাইন্ড গাইডের মাধ্যমে সঠিক জায়গা থেকে তরল সংগ্রহ করতে সাহায্য করে।
- Neonatology: সদ্যজাত শিশু ও শিশু মাথার আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। Ventriculomegaly , Hydrocephalus, Periventricular Leukomalacia নির্ণয় করতে এবং Frontanelle – এর Acoustic Barrier সম্পর্কে জানতে আল্ট্রাসাউন্ডের ( Ultrasonography ) ভূমিকা অনেক।
- Neurology: Carotid Artery সরু হলে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। Carotid এবং Intracerebral Artery , র অবস্থা জানার জন্য Carotid Ultrasonography করা হয়।
- Obstetrics: গর্ভাবস্থায় মায়ের পেটের বাচ্চার বৃদ্ধি ও অবস্থান, বাচ্চার কোন অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা সহজেই আল্ট্রাসনোগ্রাফির ( Ultrasonography ) মাধ্যমে বুঝা যায়।
- Ophthalmology: চোখের টিউমার, Optic Nerve, চোখের রক্তনালীর অস্বাভাবিকতা খুঁজতে Ocular/Optic Ultrasonography করা হয়।
- Urology: পেলভিক অর্গান ও মূত্রথলী/নালীর রোগ, যৌনাঙ্গের অস্বাভাবিকতা যেমন: Testicular Torsion, Epididymitis, Epididymal Cyst/Tumor, Hydrocele, ইত্যাদি জানতে আল্ট্রাসনোগ্রাফি নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা। তাছাড়া মহিলাদের ক্ষেত্রে পেলভিক অর্গান , যেমন : Uterus, Ovaries, Fallopian Tubes ভালোভাবে দেখার জন্য -TVS ( Transvaginal Ultrasonography ) করা হয়।
- Musculoskeletal: টেনডন, মাংশপেশী, লিগামেন্ট, নরমটিসুর পরীক্ষায় সনোগ্রাফি খুবই ভালো পরীক্ষা। তাছাড়া হাঁটু, কব্জি, কনুই, কাঁধের জয়েন্টের পরীক্ষায় এক্সরের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
- Cardiovascular System: Deep Vein Thrombosis পরীক্ষায়- Thrombosonography এবং Venous Insufficiency – তে Venosonography পরীক্ষা করা হয়।
- Therapeutic Use: কিডনির পাথর ভাঙ্গতে ( Lithotripsy ), ফিজিওথেরাপিতে বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা কমাতে এবং পুলিশ বিভাগে – Criminal Case নির্ণয়-এ আল্ট্রাসাউন্ডের ব্যবহার এখন জনপ্রিয়।
🇨🇭 এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন পরীক্ষায় – যেমন: Contrast-Enhanced Ultrasound, Interventional Ultrasonography, Hysterosonography ও Biopsy- তে আল্ট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার আছে।
🇨🇭 রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ):
🇨🇭 সিনোগ্রাম, ডায়াগনস্টিক সনোগ্রাফি, আল্ট্রাসনোগ্রাম কয়েকটি নামে পরিচিত। মূলত অতি উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ছবি দেখে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি এটি। শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করা হয় বলে এটির ব্যবহারে শরীরের বাড়তি কোনো ক্ষতির ঝুঁকি থাকে না। সে কারণেই মাতৃগর্ভে শিশুর অবস্থান ও তার সুস্থতা সম্পর্কিত তথ্য পেতে আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
🇨🇭 যদিও প্রচলিত ধারণা যে আল্ট্রাসনোগ্রাম পেটে করা হয়: কিন্তু শরীরের লিভার, হার্ট, কিডনিসহ প্রায় সব স্থানেই করা যায়। কিছু কিছু বায়োপসি করতেও আল্ট্রাসনোগ্রামের ব্যবহার করা হয়।
আল্ট্রাসাউন্ড মানে এমন শব্দ, যা সাধারণ মানুষ কানে শুনতে পায় না। রোগ নির্ণয়প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত এই শব্দতরঙ্গের মাত্রা থাকে 02 থেকে 18 মেগাহার্জের মধ্যে।
🇨🇭 উচ্চমাত্রার শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করলে ভালো মানের ছবি পাওয়া যায়, কিন্তু তা শরীরের অভ্যন্তরে পৌঁছতে পারে না। ত্বক ও মাংসপেশি তা শুষে নেয়। তাই যত বেশি ভেতরের ছবি দেখার প্রয়োজন হয় তত কম মাত্রার তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়, যদিও তাতে ছবির মান কমে যায়।
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) যেভাবে কাজ করে:
🇨🇭 যন্ত্রের মাধ্যমে পাঠানো বিশেষ মাত্রার শব্দতরঙ্গ শরীরের নরম মাংসপেশি ও তরল ভেদ করে শক্ত কোনো অংশে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে। যেমন: হার্টের আল্ট্রাসনোগ্রাম যখন করা হয় তখন শব্দতরঙ্গ রক্ত ভেদ করে হার্টের আবরণীতে গিয়ে ফিরে আসে এবং মনিটরে একটি ছবির অবয়ব তৈরি করে। এই ফিরে আসা শব্দতরঙ্গ যে ছবি তৈরি করে, তা দেখেই সনোগ্রাফ স্পেশালিস্ট রোগ সম্পর্কে ধারণা করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ নারীদের জরায়ু টিউমার এবং ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং কি? ডাঃ মাসুদ হোসেন।
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) কোথায় কোথায় ব্যবহৃত হয়?
🇨🇭 মূলত রোগ নির্ণয়ের জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে হয়। কিন্তু কিছু চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়। যেমন: থেরাপিউটিক প্রসিডিউর ও ইন্টারভেনশন গাইডের ক্ষেত্রে।
🇨🇭 সাধারণত সনোগ্রাফি যিনি করেন তিনিও একজন চিকিৎসক। তবে তিনি সনোগ্রাফিতে স্পেশালিস্ট। সনোগ্রাফি করে যথাযথ রোগ নির্ণয় করতে হলে অবশ্যই ডিগ্রিধারী সনোগ্রাফার দিয়ে করাতে হবে। তিনি প্রাথমিকভাবে ছবি ও সনোগ্রাফের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন তৈরি করেন, যা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে রোগটি যথাযথভাবে নির্ণয় করে চিকিৎসায় সহায়তা করে।
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) করার সময় যে অংশটি সনোগ্রাফারের হাতে থাকে তা ট্রান্সডিউসার নামে পরিচিত। ত্বকে জেলির মতো এক ধরনের তরলও ব্যবহার করতে হয়।
🇨🇭 স্নায়ুর ( Nerve ) অতি কাছে যখন ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যানেসথেসিয়া বা অবচেতনকারী প্রয়োগ করা হয় তখন গাইড হিসেবে অনেক সময় আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) ব্যবহার করতে হয়।
🇨🇭 হৃদরোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) ব্যবহৃত হয়। বহুল প্রচলিত ইকোকার্ডিওগ্রাম আসলে সনোগ্রাম। কালার ডপলারের মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ ও হার্টের টিস্যুর অবস্থা অত্যন্ত ভালোভাবে বোঝা সম্ভব। এর মাধ্যমে হার্টের ভাল্ভ কতখানি কর্মক্ষম আছে, কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না, ভালভুলার রিগারজিটেশন আছে কি না, হার্ট ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারছে কি না ইত্যাদিও জানা যায়। আবার রক্তনালি ব্লকড বা সরু হলে আর্টারিয়াল সনোগ্রাফির মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। ভেনাস সনোগ্রাফির মাধ্যমে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস পর্যালোচনা করা যায়।
🇨🇭 ইমার্জেন্সি মেডিসিনে আল্ট্রাসনোগ্রাফির ( Ultrasonography ) ব্যবহার এখন খুব বেড়েছে, যার মাধ্যমে দ্রুত আঘাতের পরিমাণ ও বিস্তৃতি, পেরিকার্ডিয়াল টেমপোনেড, হেমোপেরিটোনিয়ামের মতো জরুরি অবস্থায় নির্ণয় করে তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। আর গলব্লাডার বা অ্যাপেন্ডিক্সের মতো হঠাৎ ব্যথা হয় এমন অসুখও নির্ণয়ে ইমার্জেন্সিতে আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) করতে হয়।
🇨🇭 পরিপাকতন্ত্র বা পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম বহু কারণেই করতে হয়। মূলত পেটের আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমেই কিডনি, লিভার, স্প্লিন, গলব্লাডার, প্যানক্রিয়াজ বা অগ্ন্যাশয়, পেটের টিউমার ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়।
🇨🇭 নবজাতকের মাথার ওপরের দিকের নরম অংশ স্ক্যান করে তার মস্তিষ্কে কোনো গঠনগত অসংগতি, হাইড্রোক্যাফালাস, পেরিভেন্ট্রিকুলার লিউকোম্যালাসিয়া
ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। পরে এ নরম অংশ ক্রমেই শক্ত হাড়ে পরিণত হয়ে গেলে আর আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) করে মস্তিষ্ক পরীক্ষা করা যায় না।
🇨🇭 প্রসূতিবিদ্যায় বহু ক্ষেত্রে আল্ট্রাসনোগ্রাম ব্যবহার করতে হয়। এমনকি গর্ভধারণের একেবারে প্রাথমিক অবস্থায়ও অনেক সময়ই গর্ভধারণ নিশ্চিতকরণ পরীক্ষা হিসেবেও এটি করা হয়। জন্মানোর আগ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে দেখা হয় অনাগত শিশুর সুস্থতাও। ডপলার সনোগ্রাফির মাধ্যমে শিশুর হৃদস্পন্দন বোঝা যায়। এতে শিশুর জন্মগত কোনো হার্টের অসুখ থাকলে তা আগে থেকেই জানা যায়।
🇨🇭 ইউরোলজির বহু রোগ নির্ণয় সহজ হয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রামের ব্যবহারের কারণে। যেমন প্রস্রাবের পর কতখানি প্রস্রাব থলিতে আটকে আছে, তা জানতে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা এটি। আবার প্রজননতন্ত্র, বিশেষ করে জরায়ু ও শুক্রথলির রোগ নির্ণয়েও আল্ট্রাসনোগ্রাম জরুরি। টেস্টিকুলার ক্যান্সার, হাইড্রোসিলি বা ভেরিকোসিলির পার্থক্য বুঝতেও এ পরীক্ষা কাজে লাগে।
🇨🇭 হাড়ের আল্ট্রাসনোগ্রাম ভালো হয় না, কিন্তু হাড়ের আবরণী, লিগামেন্ট, স্নায়ু, মাংসপেশি ও টেন্ডন আল্ট্রাসনোগ্রাম করে এগুলোর অসুখ নির্ণয় করা যায়।
🇨🇭 ডপলার আল্ট্রাসনোগ্রাম:
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রামের একটি ধরন, যেখানে – শব্দতরঙ্গের পরিবর্তন বা ডপলার ইফেক্ট দিয়ে লোহিত রক্তকণিকার অবস্থান নিশ্চিত করা যায়। সাধারণত রক্তনালির ভেতর দিয়ে রক্তপ্রবাহের গতি, রক্তনালিকা সরু হয়ে যাওয়া, নালিকা গাত্র মোটা হয়ে যাওয়া, হৃদস্পন্দন নির্ণয় করতে ডপলার আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) ব্যবহৃত হয়।
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রামের ( Ultrasonography ) প্রস্তুতি:
🇨🇭 বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আল্ট্রাসনোগ্রামের জন্য আলাদা কোনো প্রস্তুতির দরকার হয় না। কিন্তু লিভার ও গলব্লাডার-সংক্রান্ত রোগ নির্ণয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে খালি পেটে থাকতে হয়। গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ে, প্রস্রাবের থলিতে আটকে থাকা প্রস্রাবের পরিমাণ নির্ণয়ে বেশি করে পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) কি খালি পেটে করতে হয়?
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) করানোর আগে নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে বলা হয়, বা বেশি করে পানি খেতে বলা হয়। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, সংশ্লিষ্ট ডাক্তার রোগীকে কতক্ষন আগে থেকে না খেয়ে থাকতে বলেছেন। না খেয়ে থাকতে বলা, মানে হলো একদমই কিছু খাওয়া যাবে। কিন্তু না, না খেয়ে থাকতে বলা মানে একদমই না খেয়ে থাকতে হবে। হাল্কা কিছুও যদি খান, আর পেটে কোনোভাবে গ্যাস তৈরী হয়, সেটাতে জটিলতা তৈরী হতে পারে। আবার পানি খেতে বললে পানিই খেতে হবে, জুস বা অন্য কোনো তরল খাবার নয়।মোটকথা হলো, আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর আগে রোগীকে কখনো ভরা পেট কিংবা খালি পেট, কখনও পূর্ণ মূত্রথলি কিংবা শূন্য মূত্রথলি অবস্থায় থাকতে হয়। প্রয়োজনে কখনো আবার সারারাত খালি পেটে অবস্থায় রেখেও আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য যেটা করবেন, তা হলো আগে থেকেই ডাক্তারের কাছ থেকে ক্লিয়ারলি শুনে নেবেন সবকিছু। যাতে ঠিক সময়ে যেয়ে কোনো সমস্যা তৈরী না হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর সময় আরো যে ব্যপারে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, সেটা হলো আপনার পোষাক। আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর সময় আপনার জন্য উত্তম হবে আরামাদায়ক ও সুতি পোশাক পরা।
🇨🇭 গর্ভাবস্থা পরীক্ষাসমূহ, গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাম আমাদের দেশে সাধারণত গর্ভাবস্থায় তিনবার আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পরীক্ষা গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ।
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। এই পরীক্ষাটি কীভাবে করা হয়, কখন করা হয়, কী দেখা হয়, শিশু ছেলে না কি মেয়ে সেটা বোঝা যায় কি না, পরীক্ষাটি গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ কি না , সাধারণত এসব বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা থাকে। এই প্রশ্নগুলো নিয়ে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফি কী? What Is Ultrasonography ?
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফি এক ধরনের ইমেজিং বা ছবি দেখার পরীক্ষা। একে অনেকসময় সনোগ্রাম, আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা বা আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান বলা হয়। এই পরীক্ষায় বিশেষ শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের ভেতরের অংশের ছবি দেখা যায়।
🇨🇭 বিশেষ হাই-ফ্রিকোয়েন্সি শব্দ তরঙ্গ তৈরি করা হয় – প্রোব, নামক ছোটো ও ভোঁতা যন্ত্রের সাহায্যে। এই প্রোবটি শরীরের নির্দিষ্ট স্থানের সংস্পর্শে নেওয়ার মাধ্যমে সেই অংশের ছবি দেখা যায়। পরীক্ষার সময়ে যেই ছবিটি কম্পিউটার স্ক্রিনে ভেসে ওঠে এবং পরবর্তীতে প্রিন্ট করা হয় তাকে আলট্রাসনোগ্রাম – Ultrasonography ,বলে।
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাফি কেন করা উচিত?
🇨🇭 আমাদের দেশে সাধারণত তিনবার আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়,
🧪 প্রথম আলট্রাসনোগ্রাফি প্রথম গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাক্তার আপনাকে সাধারণত গর্ভাবস্থার 10-14 তম সপ্তাহে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দিবেন। এই সময়ে পরীক্ষা করালে সাধারণত সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়। গর্ভধারণের পর বেশি আগেভাগে আলট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography )
করালে সঠিক ফলাফল না ও আসতে পারে।
🇨🇭 প্রথম স্ক্যানে বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে। যেমন: ভ্রূণ জরায়ুতে ঠিকমতো বসেছে কি না। ভ্রূণ অবস্থায় শিশু জরায়ুর বাইরে নিজেকে গেঁথে নিলে তাকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলা হয়। এক্ষেত্রে শিশুটি বাঁচতে পারে না। দ্রুত সঠিক চিকিৎসা না নিলে মায়ের জীবনও হুমকির মুখে পড়তে পারে।
🇨🇭 প্রথম স্ক্যান থেকে উঠে আসা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের মধ্যে রয়েছে:
🩸 আপনি কত সপ্তাহের গর্ভবতী ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ কবে গর্ভে যমজ বা একাধিক শিশু আছে কি না গর্ভের শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না এ ছাড়া শিশুর কিছু শারীরিক অবস্থা নির্ণয় করা যায়। যেমন: মেরুদণ্ড ঠিকমতো বন্ধ না হওয়া ( স্পাইনা বিফিডা )।
🇨🇭 বিশেষ তথ্য: আলট্রাসনোগ্রাফির সাহায্যে ডাউন সিনড্রোম পরীক্ষা।
🇨🇭 গর্ভের শিশু যদি ( ডাউন সিনড্রোম ) এর ঝুঁকিতে থাকে, যেমন: গর্ভধারণকালে মায়ের বয়স বেশি হওয়া, বংশগত কারণ এবং মায়ের অপর কোনো সন্তানের ডাউন সিনড্রোম থাকা, তাহলে ডাক্তার – 10 – 14, তম সপ্তাহের স্ক্যানের সময়ে বিশেষ পদ্ধতিতে আলট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) করার পরামর্শ দিতে পারেন।
🇨🇭 এক্ষেত্রে সাধারণ সব তথ্যের পাশাপাশি শিশুর ঘাড়ের কাছে থাকা তরলের পরিমাণ মেপে দেখা হয়। এই পদ্ধতিকে ডাক্তারি ভাষায় ( Nuchal Translucency Scan ) বলা হয়। এই সময়ে আলট্রাসনোগ্রাফির পাশাপাশি মায়ের রক্তের বিশেষ ( DNA ) পরীক্ষা করে ডাউন সিনড্রোমের ঝুঁকি নির্ণয় করা হয়।
🇨🇭 দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাফি গর্ভাবস্থার 18-22, তম সপ্তাহে দ্বিতীয় আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। একে অনেকসময় ( অ্যানোমালি স্ক্যান ) বলা হয়। গর্ভাবস্থায় অন্তত একবার আলট্রাসনোগ্রাফি করালেও এই সময়ে করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পরীক্ষার সময়ে শিশুর মুখমণ্ডল, হাত-পা, পেট ও নাড়িভুঁড়ি, হাড়, হার্ট, কিডনি, ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হয়। এই স্ক্যানে অনেকগুলো তথ্য পাওয়া যায়।
যেমন:
গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের জন্মগত ত্রুটি বা ( অ্যানোমালি ) আছে কি না শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে গড়ে উঠছে কি না শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে চলছে কি না
গর্ভের শিশুর আকার ও ওজন শিশু ছেলে না কি মেয়ে। এই তথ্য জানতে চাইলে স্ক্যানের শুরুতে ডাক্তারকে জানিয়ে রাখবেন। তবে মনে রাখবেন, শিশুর অবস্থানসহ বিভিন্ন কারণে শিশুর লিঙ্গ বুঝে ওঠা সম্ভব না-ও হতে পারে তৃতীয় আলট্রাসনোগ্রাফি গর্ভাবস্থার 36-38 তম সপ্তাহে তৃতীয় আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এই স্ক্যানে প্রসবের আগে গর্ভের শিশু ও গর্ভফুলের অবস্থান দেখে নেওয়া হয়। এই স্ক্যান ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে ডাক্তারদের সাহায্য করে।
🇨🇭 এসময়ে দেখা হয়: গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার অবস্থান। প্লাসেন্টার অবস্থান স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে নেমে আসলে ( প্লাসেন্টা প্রিভিয়া ) নামক মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সিজারের সাহায্যে ডেলিভারিসহ বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন হতে পারে
গর্ভের ভেতরে শিশু লম্বালম্বি, আড়াআড়ি অথবা কোণাকুণি- কোন অবস্থানে আছে। নরমাল ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত অবস্থানে না থাকলে নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করা হতে পারে। অন্যথায় সিজারের প্রয়োজন হতে পারে।
গর্ভের শিশুর চারপাশে থাকা ( অ্যামনিওটিক তরল ) এর পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করা হয়৷ এটি পরিমাণে বেশি বা কম হলে গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং ডেলিভারির সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারে
এ ছাড়া শিশু গর্ভের ভেতর ঠিকমতো নড়াচড়া করছে কি না সেটাও দেখা হয় অন্যান্য স্ক্যান
এই তিনটি স্ক্যানের পাশাপাশি আপনার গর্ভাবস্থার ধরন, পূর্বের ইতিহাস ও সম্ভাব্য জটিলতার ভিত্তিতে ডাক্তার এর চেয়ে বেশি আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দিতে পারেন। কখন ও মোট কয়বার আলট্রাসনোগ্রাফি করতে হবে সেই বিষয়ে আপনি ও আপনার ডাক্তার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। সেই সাথে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রয়োজন হলে ডাক্তার সেই অনুযায়ী পরামর্শ দিবেন।
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) করালে কি গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে?
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গর্ভাবস্থায় এই পরীক্ষা করানো নিরাপদ।
🇨🇭 এই পরীক্ষায় কোনো ধরনের ক্ষতিকর রেডিয়েশন ব্যবহার করা হয় না। উচ্চ মাত্রার শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে শরীরের ভেতরের অংশের ছবি তোলা হয়। তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাফি – Ultrasonography , কিভাবে করা হয়?
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় মূলত 02 টি উপায়ে আলট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) করা হয়:
🛑 1. পেটের আলট্রাসনোগ্রাফি এক্ষেত্রে পেটের, বিশেষ করে তলপেটের ওপরে প্রোব বসিয়ে জরায়ু, গর্ভের শিশু ও পেটের ভেতরের অন্যান্য অঙ্গের ছবি দেখা যায়। গর্ভাবস্থার বেশিরভাগ স্ক্যান এই উপায়েই করা হয়।
পেটের আলট্রাসনোগ্রাম করার আগে, বিশেষ করে 10-14 সপ্তাহের স্ক্যানের 01 ঘন্টা আগে আধা লিটার পানি অথবা তরল খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এর কারণ হলো, এই পরীক্ষার আগে যথেষ্ট প্রস্রাবের চাপ থাকতে হয়। এটি ডাক্তারকে পরীক্ষার সময়ে গর্ভের শিশুর তথ্যগুলো ভালোমতো নির্ণয় করতে সাহায্য করে।
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য প্রথমে আপনার বুক থেকে তলপেট পর্যন্ত থাকা কাপড় সরিয়ে তলপেটের ওপর আলট্রাসাউন্ড জেল লাগানো হবে। তারপর প্রোবের সাহায্যে আপনার পেটের বিভিন্ন অংশের ওপর চেপে চেপে ভেতরের ছবি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
🇨🇭 স্ক্যানের সময়ে সাধারণত কোনো ব্যথা লাগে না। তবে ডাক্তার কখনো কখনো ভালোমতো দেখার জন্য পেটে সামান্য চাপ দিতে পারেন। এতে ব্যথা না হলেও কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। স্ক্যানের প্রক্রিয়াতে সাধারণত 15-30 মিনিট সময় লাগে।
🇨🇭 প্রোব দিয়ে আপনার পেটের ভেতর হাই-ফ্রিকোয়েন্সি বা আলট্রাসনিক শব্দ তরঙ্গ পাঠানো হবে। এগুলো উচ্চ মাত্রার শব্দ তরঙ্গ, যা আমাদের শ্রবণসীমার বাইরে। এই শব্দতরঙ্গ নরম মাংসপেশি কিংবা তরলের ভেতর দিয়ে যেতে পারে কিন্তু শক্ত হাড়ের গায়ে লাগলে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে।
🇨🇭 এভাবে এই তরঙ্গ আপনার জরায়ুর ভেতরে শিশুর গায়ে বাধা পেয়ে ফেরত আসবে। ফেরত আসা প্রতিধ্বনিগুলো আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন প্রসেস করে ভিডিও ইমেজ বা ছবিতে রূপান্তরিত করে৷
🇨🇭 এই ছবি থেকে গর্ভের শিশুর আকার, আকৃতি, অবস্থান, নড়াচড়াসহ বিভিন্ন তথ্য ফুটে উঠবে। ছবি তাৎক্ষণিকভাবে কম্পিউটার স্ক্রিনে দেখা যাবে এবং পরে প্রিন্ট করে কিংবা ভিডিও ফাইল হিসেবে আপনাকে দেওয়া হবে। স্ক্রিন ভালোমতো দেখার সুবিধার্থে ডাক্তার রুমের আলো কমিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন।
🛑 2. যোনিপথের আলট্রাসনোগ্রাফি এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সরু, আঙুলের মতো একটা প্রোব যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে ঢুকিয়ে ভেতর থেকে জরায়ু ও আশেপাশের অঙ্গের ছবি দেখা যায়। এই পদ্ধতিতেও ব্যথা লাগে না। তবে সামান্য অস্বস্তি হতে পারে। এই পদ্ধতিকে (;ট্রান্সভ্যাজাইনাল আলট্রাসনোগ্রাফি ) বলা হয়।
🇨🇭 গর্ভাবস্থার একেবারে শুরুর দিকে এবং বিশেষ কিছু রোগ (যেমন: গর্ভবতীর জরায়ুমুখের সমস্যা) নির্ণয়ে এই পথে পরীক্ষা করা হতে পারে। কারণ গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে আপনার জরায়ু ও ডিম্বনালী তলপেট অপেক্ষা যোনিপথের বেশি কাছে থাকে। ফলে গর্ভের শিশুর ও আশেপাশের বিভিন্ন অঙ্গের ছবি অধিক পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়।
🇨🇭 এক্ষেত্রেও পেটের আলট্রাসনোগ্রামের মতো একই নীতির ওপর ভিত্তি করে গর্ভের শিশু ও আশেপাশের অঙ্গগুলোর তথ্য খুঁজে বের করা হয়।
🇨🇭 উল্লেখ্য, যোনিপথে আলট্রাসনোগ্রাম করতে হলে আগে সাধারণত পেটের ওপর আলট্রাসনোগ্রাম করে নেওয়া হয়। এরপর প্রস্রাব করে আসতে হয়। তারপর যোনিপথে প্রোব ঢুকিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।
🇨🇭 আলট্রাসনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) রিপোর্ট কি ভুল হয়?
🇨🇭 কখনো কখনো শিশুর অবস্থান কিংবা পরীক্ষার সময়সহ নানান কারণে আলট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে পুরোপুরি পরিষ্কার ছবি পাওয়া সম্ভব হয় না। তাই আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট সবসময় শতভাগ সঠিক না-ও হতে পারে।
🇨🇭 যেমন, গর্ভাবস্থার 10-14 তম সপ্তাহের পরে আলট্রাসনোগ্রাফির সাহায্যে গর্ভের শিশুর ডেলিভারির তারিখ বের করার চেষ্টা করলে সেটি পুরোপুরি সঠিক ফলাফল না-ও দিতে পারে। আবার অনেকসময় হয়তো 18-22 তম সপ্তাহে অনেকগুলো জন্মগত ত্রুটি ধরে ফেলা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
🇨🇭 নিচের ক্ষেত্রগুলোতে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে শতভাগ সঠিক তথ্য খুঁজে বের করা কঠিন হতে পারে:
🇨🇭 গর্ভের ভেতরে শিশু সুবিধাজনক অবস্থানে না থাকলে গর্ভের শিশুকে চারপাশ থেকে ঘিরে থাকা ( অ্যামনিওটিক তরল ) এর পরিমাণ বেশি হলে গর্ভবতী মায়ের ওজন অথবা পেটে চর্বির পরিমাণ বেশি হলে পেটে কোনো ধরনের কাটা দাগ অথবা সেলাই থাকলে।
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় একটি আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট দেখে বুঝবেন কীভাবে?
🇨🇭 গর্ভাবস্থার তিনটি ত্রৈমাসিক জুড়ে শিশুর বৃদ্ধি, মায়ের প্রজনন অঙ্গগুলির স্বাস্থ্য, ভ্রূণের হার্ট ও গর্ভাবস্থার অবস্থা বোঝার জন্যে একটি নির্ণায়ক পদ্ধতি হল আল্ট্রাসোনোগ্রাফি। একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি ( Ultrasonography ) মেশিন একটি বিশেষ যন্ত্র ও আল্ট্রাসাউন্ড জেলের দ্বারা গর্ভের ভিতরের অবস্থা দেখার জন্যে আল্ট্রাসোনিক ওয়েভ ব্যবহার করে।
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় করা বিভিন্ন প্রকার আল্ট্রাসাউন্ড, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বাড়ন্ত গর্ভের আল্ট্রাসোনিক স্ক্যান করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। গর্ভাবস্থায় করা আল্ট্রাসাউন্ড প্রধানত 05 ধরনের হয়:
🧪 ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড: ( ট্রান্সভ্যাজাইনাল ) কথার মানে হল যোনির মধ্যে দিয়ে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অথবা জটিল সমস্যা থাকলে গর্ভবতী মহিলাদের এই স্ক্যানটি করা হয়। ভ্রূণের বয়স 10 সপ্তাহের কম হলে এটি করা হয়।
🧪 সাধারণ আল্ট্রাসাউন্ড: এই প্রকার আল্ট্রাসাউন্ডে টেকনিশিয়ান আপনার গর্ভস্থ শিশুর 2D ছবি দেখার জন্যে একটি লাঠির আকারের ট্রান্সডিউসার আপনার পেটের ওপর চালান।
🧪 ফিটাল ইকোকার্ডিওগ্রাফি: শিশুর হার্টে কোনো সমস্যা বা ত্রুটি আছে কিনা তা দেখার জন্যে ও সাধারণ আল্ট্রাসাউন্ডে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গেলে তখন এটি করা হয়।
🧪 3D আল্ট্রাসাউন্ড: এই সোনগ্রাফিটি একটি বিশেষ ট্রান্সডিউসারের দ্বারা করা হয় যা আপনার ভ্রূণের সম্পূর্ণ ও বিস্তারিত ছবি প্রদান করে।
ডায়ানামিক 3D আল্ট্রাসাউন্ড।
🧪 4D আল্ট্রাসাউন্ড:
এটি 3D আল্ট্রাসাউন্ডের মতোই। কেবলমাত্র পার্থক্য হল এক্ষেত্রে আপনি আপনার শিশুর নড়াচড়া দেখতে পাবেন এবং কিছু-কিছু ক্ষেত্রে তার একটি ভিডিও রেকর্ডিংও পেতে পারেন।
🇨🇭 গর্ভাবস্থার আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট বুঝবেন কীভাবে?
সোনোগ্রামে যখন আপনি আপনার গর্ভের ছবি দেখবেন, ছবিটির কোণগুলির চারপাশে আপনি একটি হালকা ধুসর বা সাদা লাইন দেখতে পাবেন। আপনি একটি বড় কালো অংশ দেখতে পাবেন যা অ্যামনিওটিক তরল নামে পরিচিত।
ওপরে উল্লিখিত গাঢ় অংশ অর্থাৎ অ্যামনিওটিক তরলের মধ্যে আপনার শিশুকে ধুসর অথবা সাদা রঙের দেখাবে।
গর্ভাবস্থার প্রথম 04 সপ্তাহে করা আল্ট্রাসাউন্ডে আপনার ভ্রূণটিকে একটি সিদ্ধ শিমের আকার ও আকৃতির দেখাবে।
আপনি যদি 12 সপ্তাহে একটি স্ক্যান করান তবে আপনার শিশুর মাথাটি দেখতে পাবেন।
20 সপ্তাহে স্ক্যানের মধ্যে যে পরিবর্তনগুলি দেখবেন সেগুলি অসাধারণ। আপনি শিশুর চোখ, শিরদাঁড়া, হার্ট ও পা দেখতে পাবেন। আপনি শিশুর লিঙ্গও জানতে পারবেন।
স্ক্যান রিপোর্টের ওপরের দিকে লেখা সংখ্যাগুলি টেকনিশিয়ানদের প্রয়োজনে করা কিছু তথ্যের রেকর্ড, যেমন: আপনার নাম, হাসপাতালের রেফারেন্স কোড, মেশিনের ক্যালিব্রেশন সেটিং ইত্যাদি।
🇨🇭 টেকনিশিয়ান আপনার জরায়ুর আল্ট্রাসাউন্ড Ultrasonography, করা শুরু করলে স্ক্যানের সবচেয়ে উপরের ছবিটিতে আপনার জরায়ুর ওপরের টিস্যুগুলি দেখা যাবে। আল্ট্রাসাউন্ডের ছবিতে আপনি আপনার জরায়ুর আস্তরণ, ভিতরের অংশ ও পিছনের অংশও দেখতে পাবেন।
🇨🇭 রিডিংয়ের রঙগুলি জরুরি। আল্ট্রাসাউন্ড সাধারণত সাদাকালো হয়, তবে প্রতিটি রঙের টোনের মধ্যে কিছু সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। আপনার শরীরের বিভিন্ন টিস্যুগুলি বিভিন্ন সাউন্ড প্রদান করে, ওয়েভগুলিকে কিছু টিস্যু প্রতিফলন করে ও কিছু শোষণ করে নেয়। টিস্যুগুলি ছবিতে যত বেশি সাদা দেখায় তার ঘনত্ব তত বেশি হয়। তাই স্ক্যান করা ছবিতে রঙের তারতম্যের কারণ হল টিস্যুর ঘনত্বের তারতম্য। আপনার জরায়ুর আল্ট্রাসাউন্ডে অ্যামনিওটিক তরলটিকে কালো অংশের মতো দেখাবে। টিস্যুগুলি ধুসর বর্ণের দেখাবে। যদি কিছু কঠিন টিস্যু যেমন হাড়ের আল্ট্রাসাউন্ড নেওয়া হয় তবে তা সাদা রঙের দেখাবে।
🇨🇭 একটি শিশুর সোনোগ্রাম Ultrasound বোঝার জন্যে কিছু টিপস:
- ভ্রূণের গর্ভকালীন বয়স- CRL ( ক্রাউন-রাম্প-লেন্থ ) দ্বারা পরিমাপ করা হবে। এটি হল পশ্চাৎ অংশের ওপর থেকে নিচের মাপ। নির্ধারিত দৈর্ঘ্যটি একটি ইন্টার্নাল চার্টের সাথে মিলিয়ে গর্ভের ভিতর শিশুর গর্ভকালীন বয়স নির্ধারণ করা হয়।
সাধারণত এই সোনোগ্রাফিটি গর্ভাবস্থার 7 থেকে 13 সপ্তাহের মধ্যে করা হয়। - মাথার পরিধি পরিমাপ করা হয়।
2 নং ধাপটি গর্ভাবস্থার 13 সপ্তাহে করা হয়। - এতে থাই বোন ও ফিমার বোনের পরিমাপ করা হয়। শিশুর দৈর্ঘ্যের বৃদ্ধি জানার জন্যে এটি করা হয়।
3 নং ধাপটি গর্ভাবস্থার 13 সপ্তাহে করা হয়। - পেটের পরিধি নির্ধারণের মাধ্যমে ভ্রূণের উচ্চতা ও দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা যাবে।
গর্ভাবস্থার 20 সপ্তাহে এটি করা হয়। - কোনো সমস্যা আছে কিনা তা জানার জন্যে ভ্রূণের পরিমাপগুলি পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। হিউমারাস বা ফিমার বোনের দৈর্ঘ্য সাধারণের থেকে কম হলে বা ভ্রূণের নাসিকার হাড়গুলি অনুপস্থিত থাকলে তা ডাউন সিন্ড্রমের লক্ষণ হয়। এটি গর্ভাবস্থার 20–40 সপ্তাহের মধ্যে করা হয়।
মনে রাখার বিষয়
আল্ট্রাসাউন্ড বিভিন্ন কারণে করা হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় করা আল্ট্রাসাউন্ড পাঁচ ধরনের হয় যার সাহায্যে গর্ভের ভিতরে শিশুর স্বাস্থ্য ও মায়ের প্রজনন গঙ্গগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। আপনার গর্ভাবস্থার আলাদা-আলাদা 5 টি ধাপে আল্ট্রাসাউন্ড করা হয়। কালো অংশের অ্যামনিওটিক তরলের মধ্যে ভ্রূণটিকে ধুসর বর্ণের দেখাবে। যদিও মনে রাখবেন, আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্ট বোঝা কঠিন, তাই সর্বদা ফলাফল বোঝার জন্যে আপনার ডাক্তারের সাহায্য নিন।
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) করা কি নিরাপদ?
🇨🇭 প্রথমেই জেনে রাখা ভালো, আল্ট্রাসনোগ্রাম গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের ক্ষতি করে না। অনেকেই মনে করেন, আল্ট্রাসনোগ্রাম থেকে কোনো তেজস্ক্রিয় রশ্মি শিশুর ক্ষতি করে।
🇨🇭 কিন্তু আসলে এটা এক্স-রে নয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম হচ্ছে অতি উচ্চ কম্পনসম্পন্ন শব্দ তরঙ্গ, যা সাধারণ শ্রবণ ক্ষমতার বাইরে।
একজন নারী সঠিকভাবে গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপ পার করছেন কিনা, গর্ভের শিশু সুস্থ আছে কিনা, এই সব কিছুই জানা সম্ভব আল্ট্রাসনোগ্রাম করার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে যদি গর্ভের শিশু বা মায়ের কোনো বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তাও বোঝা সম্ভব। আর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া যায়।
🇨🇭 আল্ট্রাসনোগ্রাম কতবার করা যায়?
🇨🇭 যেহেতু এর ক্ষতিকারক দিক নেই তাই যতবার ইচ্ছা ততবারই করা যায়।
🇨🇭 এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তবে এই পরীক্ষা কিছুটা ব্যয়বহুল অনেকের জন্য। এছাড়া মা এবং শিশুর সব সিমটম যদি স্বাভাবিক থাকে তবে দুই থেকে তিনবারের বেশি আল্ট্রাসনোগ্রাম করার প্রয়োজন নেই।
সেক্ষেত্রে গর্ভের সময়কাল ও প্রসবের সঠিক সময় বের করার জন্য সন্তান ধারণের 7-8 সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়।
🇨🇭 16 থেকে 20 সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার করা হয়। এসময় আলট্রাসনোগ্রাম করলে বাচ্চার জন্মগত কোনো ত্রুটি আছে কি না তা জানা যায়। গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে এটাও জানা যায়।
🇨🇭 বাচ্চার ওজন বাড়ছে কিনা জানতে তৃতীয়বার 30-38 সপ্তাহে আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেয়া হয়। জন্মের সময় বাচ্চার পজিশনসহ অন্য বিষয়গুলো সব ঠিকভাবে আছে কিনা জানা যায়।
🇨🇭 হাসপাতাল ভেদে আলট্রাসনোগ্রাম ( Ultrasonography ) করতে:
🧪 সাদাকালো: 500/- থেকে 1000/- এবং
🧪 কালার করতে : 1000/- থেকে 2500/- টাকা খরচ হয়।
🇨🇭 গর্ভাবস্থায় একজন নারীর সব সময় পরিবার, কর্মক্ষেত্রসহ সবার সব ধরনের সহযোগিতা, পাশে থাকা, ভালোবাসা ও যত্ন নেয়া প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি নারীর জীবনে পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে। আতঙ্কিত না হয়ে গর্বাবস্থার পুরো সময়টা উপভোগ করুন। অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
🇨🇭 ডাঃ মাসুদ হোসেন।
Dr. Masud Hossain.
( বি, এইচ, এম, এস )
(ডি, এইচ, এম, এস) ঢাকা।
🇨🇭 বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড। [ নিবন্ধন নং- Gov.Reg. No. 35423 ] রেজিস্ট্রার প্রাপ্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
🇨🇭 আমার এই দুইটি নাম্বার:
+8801907-583252
+8801302-743871
( What’sApp- হোয়াটসঅ্যাপ এবং Imo- ইমো ) খোলা আছে, চিকিৎসা নিতে চাইলে আমার এই দুইটি নাম্বার ফোনে সেভ করে সমস্যাগুলো লিখে অথবা অডিও রেকর্ড দিয়ে জানাবেন। আমি ফ্রী হয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
🛑 অরিজিনাল জার্মানী ঔষধ ও উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান।
🇨🇭 রোগী দেখার সময়:
🛑 বিকাল 05:00 রাত 10:00 টা পর্যন্ত।
🇨🇭 চিকিৎসা : সুখবর হচ্ছে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তির উপায়।
🇨🇭 সতর্কতাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঝুকিপূর্ণ।
☎+8801907-583252 (WhatsApp, IMO)।
☎ +8801302-743871 (WhatsApp, IMO)।