যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।

যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।

🛑 যৌনবাহিত রোগব্যাধি ও সংক্রমণ: যৌনবাহিত সংক্রমণ ( Sexually Transmitted Infections – STI ) , অথবা যৌনব্যাধি, সংক্রান্ত রোগ Venereal Diseases ( VD ) বলা হয়ে থাকে, যার বেশীর ভাগ জীবাণু সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে অবৈধ এবং অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে যৌনবাহিত রোগ ছড়ায়।
এছাড়া রক্ত, বীর্য এবং যোনিপথের নির্গত তরলের মাধ্যমে এই জীবাণু সমুহ সংক্রামিত হয়ে থাকে।

🛑 যখন কোন সুস্থ ব্যাক্তি উক্ত জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে তখন একে – STI, বলা হয়- যার মধ্যে বেশীর ভাগ রোগির প্রাথমিক অবস্থায় অল্প কিছু লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর এমনিতেই সেরে যায়।

🛑 এমন কি কিছু কিছু জীবাণু আছে 05 থেকে 15 বছর পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে দেখা যায়। যদি ও আক্রান্ত ব্যাক্তিকে কে দেখতে সম্পূর্ণ সুস্থ মনে হয় কিন্তু তার থেকে যৌন মিলন বা অন্যান্য দৈহিক সম্পর্কের কারনে একজন সুস্থ ব্যাক্তির দেহে ট্রান্সমিটেড হয়ে থাকে, মহিলাদের বেলায় পরবর্তীতে তার গর্ভের সন্তান ও আক্রান্ত হয়ে থাকে বা গর্ভবতি না হলে অনেকের বন্ধা্ত্ব দেখা দিতে পারে । পুরুষের বেলায় যৌন অক্ষ্যমতা সহ তার সাথে সম্পরক যুক্ত অন্যান্য মারাত্মক অসুখের জন্ম দিয়ে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত খুবী যন্ত্রণা দায়ক মৃত্যু ছাড়া অন্য কোন পথ থাকেনা ।

🛑 বিষয় টি এখানেই শেষ নয়, সেই সাথে উক্ত পরিবার ও তার সাথে সম্পর্ক যুক্ত সমাজের অনেকেই আক্রান্ত হওয়া এমন আশ্চর্যের কিছু নয়। সর্বশেষ তথ্যনুসারে এখন পর্যন্ত 31 এর অধিক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং প্যারাসাইট সমুহের কারণে যৌনবাহিত রোগের সৃষ্টি করে এবং সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর 88 মিলিয়ন নারীপুরুষ আক্রান্ত হয়ে থাকেন যার -95% আক্রান্ত হয়ে থাকেন অবৈধ যৌন মিলনের ফলে।

যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।

🛑 যৌনবাহিত রোগব্যাধি সমুহের কারন কি? কি জীবাণুর দ্বারা হয়ে থাকে ?

🩸 ব্যাক্টোরিয়া জনিত যৌন ব্যাধি:

  1. শ্যানক্রয়েড – Chancroid: ( Haemophilus Ducreyi )
    হিমোফাইলাস ডুকরে নামক ব্যাক্টোরিয়ার সংক্রামণে হয়ে থাকে এবং ইহা একটি যৌনবাহিত সংক্রমণ জাতীয় অসুখ, এর প্রধান লক্ষণ , যৌনাঙ্গে খুব বেশি যন্ত্রণা দায়ক ঘায়ের সৃষ্টি করে। জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার একদিন থেকে দু’সপ্তাহ পর ছোট গোটা দেখা দেয়। একদিনের মধ্যে এটা ঘায়ে পরিণত হয় বা ক্ষতের সৃষ্টি করে, ক্ষতের আকার 03 থেকে 50 মি.মি. (1/8 ইঞ্চি থেকে 02 ইঞ্চি ) হয়, ব্যথা পূর্ণ হয়। ক্ষতের কিনারাগুলো তীক্ষ্ণ এবং নিচের দিকে ডাবানো হয়। কিনারাগুলো অনিয়মিত বা এবড়ো থেবড়ো হয়। গোড়া ধূসর কিংবা হলুদাভ ধূসর পদার্থ দিয়ে আবৃত থাকে। আঘাত লাগলে কিংবা পর্দা তুলে ফেললে গোড়া থেকে সহজেই রক্তপাত হয়।
    অসুখটি সবচেয়ে বেশি হয় পরনারি-পরপুরুষ কাতর ব্যাক্তিদের ( বহু-পুরুষে আসক্ত নারিদের সাথে সহবাস করলে ) বিশেষ করে যারা পতিতালয়ে গিয়ে থাকেন তাদের এবং এর মধ্যে খৎনা করানো পুরুষদের চেয়ে খৎনা না করানো পুরুষদের শ্যানক্রয়েড আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তিনগুণ বেশি।
  2. স্যালামাইডিয়া- Chlamydia: ( Chlamydia Trachomatis )
    স্যালামাইডিয়া ব্যাকটেরিয়ার কারনে পুরুষদের ক্ষেত্রে ( অনির্দিষ্ট যৌনাঙ্গ-সংক্রমণ ) হয়ে থাকে এবং এর মধ্যে বেশীর ভাগ সিসটাইটিস ( মূত্রথলিতে জ্বালাপোড়া ) দেখা দিয়ে থাকে যা সহবাস ছাড়াও এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রামিত হতে পারে, তবে 90% সহবাস জনিত কারনেই হয়ে থাকে
    পুরুষ মহিলা উভয়ের ই মুত্রনালী, মলদ্বার এবং চোখে এই রোগ সংক্রামিত হতে পারে, এবং সংক্রামিত হওয়ার 3/4 সপ্তাহের ভিতর অসুখটির লক্ষণ সমুহ দেখা দিয়ে থাকে বা অনেকের বেলায় লক্ষনগুলি অনেকদিন পর প্রকাশ পেতে পারে।
    মহিলাদের ( ব্যথা যুক্ত প্রস্রাব, অস্বাভাবিক স্রাব, উদর বা দুধের বোটাতে ব্যথা, যৌনমিলনের সময় বা পরে রক্তপাত যা মাসিকের সাথে সম্পর্ক যুক্ত নয় এবং অবশেষ অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।
যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।

পুরুষদের ( ব্যথা ও যন্ত্রনা যুক্ত প্রস্রাব, লিঙ্গ থেকে সাদা মেঘলা বা স্বাদহীন স্রাব বাহির হতে থাকে এবং একি সাথে অণ্ডকোষে ব্যথা দেখা দিয়ে থাকে , ব্যাধিটি’র লক্ষণ দেখা দেওয়ার 7/9 দিনের ভিতর অন্যান্য গুরুতর লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।

  1. গনোরিয়া- Gonorrhea: ( Neisseria Gonorrhea )
    গনোরিয়া ও একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত যৌন সংক্রমণ রোগ। যৌন বাহিত এই রোগটি নাইসেরিয়া গনোরি নামক এক প্রকার ব্যকটেরিয়ার সঙ্ক্রামনে হয়ে থাকে যা যোনিপথে, পায়ুপথে বা মৌখিক, কারো যৌনাঙ্গ চুম্বন, লেহন বা চোষা, যৌনকর্মের মাধ্যমে সংক্রামিত হতে
    দেখা যায়।
    গন কোক্কাই নাইসেরি জীবাণু সংক্রামিত পুরুষ বা মহিলার সাথে মিলনের 8/10 দিন পর এই রোগের লক্ষন গুলো দৃষ্টিগোচর হয় । ( মহিলাদের বেলায় জীবাণু সমুহ দীর্ঘ দিন সুপ্ত অবস্থায় লুকায়িত থাকে ) পুরুষের যৌনাংগ দিয়ে পুজ ( Pus ) বের হওয়া, প্রসাবে জ্বালাপোড়া এই রোগের প্রধান উপসর্গ। মহিলাদের যোনিপথ, মূত্রনালী ও গুহ্যদারে ( সমকামীদের ) এই রোগ হয়। যদিও অনেক মহিলার ক্ষেত্রেই রোগটি কোনো লক্ষন প্রকাশ করেনা তবে প্রসাবে জ্বালাপোড়া, যোনিপথে স্রাব আসা ( Vaginal Discharge ) ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে।
  2. গ্রেনুলোমা ইঙ্গুইনালি- Granuloma Inguinale: ( Calymmatobacterium Granulomatis- Donovanosis )
    ইহা ও একটি যৌন সক্রামিত রোগ যা ক্লিব্যাসিলা- গ্রেনিলোমাইটিস নামক ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে। দক্ষিণ-পূর্ব ভারত এবং নিউ গিনিতে বেশি দেখা যায়। এই জীবাণুটি যোনি বা এনাল সেক্সের মাধ্যমে সুস্থ ব্যাক্তির দেহে ছড়িয়ে পড়লেও ওরাল সেক্সে তা ছড়ায়না তবে বেশীর ভাগ এ্যানাল সেক্সেই তা ছড়ায় এবং মহিলাদের চাইতে পুরুষরাই দ্বিগুণ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। রোগের লক্ষণ সমুহ জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার 01 থেকে 12 সপ্তাহের ভিতর দেখা দেয় , প্রথমে পায়ুপথ এবং লিঙ্গ বা যোনির আশে পাশে লাল ফুস্কুড়ি দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে স্থায়ী ভাবেই উক্ত এরিয়ার টিস্যু সমুহকে ধংস করে দেয় যা ক্রমশ সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে ( কোমর এবং পায়ে ) একি সাথে চর্মের রঙের পরিবর্তন করতে থাকে। সেই সাথে বমি বমি ভাব , বুকের তীক্ষ্ণ ব্যথা , কুঁচকিতে ব্যথা ,যোনীপথে ব্যথা ,যোনিদ্বারে ক্ষত, যৌনাকাঙ্খা কমে যাওয়া, হাঁটুতে শক্ত পিণ্ড দেখা দেওয়া, মাত্রাতিরিক্ত শারীরিক বৃদ্ধি কব্জিতে দুর্বল অনুভব করা , কাঁধ ফুলে যাওয়া, ঘাড়ের মাংসেপশীতে টান বা খিঁচুনি ইত্যাদি লক্ষণ সমুহ দেখা দিয়ে থাকে।
যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।
  1. মাইকোপ্লাজমা জেনিটেলিয়াম- Mycoplasma Genitalium :
    ইহা মাইকোপ্লাজমা ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত একটি যৌন রোগ যা মুখ গহব্বর, প্রস্রাবের রাস্থা এবং মহিলাদের জরায়ু মুখের পাতলা পর্দা সমুহ কে আক্রমন করে । ইউকে তে 01% রোগী এ জাতীয় যৌন রোগে আক্রান্ত। অসুখ টি সংক্রামিত হয় ভ্যাজিনাল, ওরাল অথবা পায়ুপথের যৌন ক্রীড়ার মাধ্যমে এবং এরা বসবাস করে পুরুষের প্রস্রাবের রাস্থা এবং মহিলাদের প্রস্রাবের রাস্থা , যোনি রাস্থা এবং জরায়ুর মুখে।
    লক্ষণ অনুসারে 2/3 সপ্তাহ পরেই পুরুষের বেলায় প্রস্রাবের রাস্থায় প্রস্রাব করতে জ্বলা-পোড়া করা এবং প্রস্রাব করার সময় তা বেশী বৃদ্ধি পায় । 10/12 দিন পর থেকে সাদা পুঁজের মত পদার্থ – মৃত ইপিথ্যালিয়াল সেল, বাহির হতে থাকে ( যাদের ইমিউনিটি শক্তি একটু বেশী তাদের বেলায় কয়েক মাস পর দেখা দিতে পারে ) মহিলাদের বেলায় সারভিক্সকেই ( জরায়ুর শেষ অংশ বা মাথা ) বেশী আক্রান্ত করে , ফলে যোনি হতে অস্বাভাবিক স্রাব বাহির হতে থাকে, সেই সাথে প্রস্রাব করতে জ্বলা পোড়া সহ , যৌন মিলন করার পর কিছুটা রক্তপাত হতে ও দেখা যায়। অসুখ টি পুরাতন হলে বিনা কারনে কোমরে ব্যাথা সহ জ্বর এবং পেটের বিভিন্ন পিরা দেখা দিতে পারে, অসুখটিতে দীর্ঘদিন ভুগলে মহিলাদের বেলায় প্রজনন গত জঠিলতা স্থায়ী ভাবেই দেখা দিতে পারে এবং পুরুষের বেলায় যৌনাঙ্গের যৌন ক্ষ্যামতা হ্রাস বা নস্ট হয়ে যেতে পারে।
  2. সিফিলিস- Syphilis ( Treponema Pallidum ):
    সিফিলিস একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত যৌনবাহিত সংক্রমণ। অন্যান্য STI, এর তুলনায় সিফিলিস সাধারণত কম হয়ে থাকে, কিন্তু বাংলাদেশে এর প্রাদুর্ভাব এখন ও একটু বেশী।সিফিলিস কে বাংলায় ফিরিঙ্গি রোগ বা গর্মি রোগ বা উপদংশ বলা হয়ে থাকে। স্পিরোসেত ব্যাকটেরিয়া ট্রেপোনেমা পেলিডাম উপজাত পেলিডাম দ্বারা সৃষ্ট একটি যৌনবাহিত রোগ। জীবাণুটি যৌন মিলন, যৌনতা জাতীয় সংস্পর্শ, রক্ত পরিসঞ্চালন, চুম্বন, চামড়ার আঘাতপ্রাপ্তি এবং গর্ভাবস্থায় বা জন্মের সময় মায়ের কাছ থেকে ভ্রূণে সংক্রমিত হতে পারে – যাকে কনজেনিটাল সিফিলিস বলা হয়।
    অসুখটি 09 থেকে 90 দিনপর পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ জীবাণু দেহে প্রবেশের পর রোগের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিতে এ রকম সময়ের প্রয়োজন হয়। সাধারণ ভাবে 15 থেকে 21 দিনের মধ্যেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেয় এবং অনেক সময় প্রাথমিক লক্ষণ- যৌনাঙ্গে ক্ষত বা ঘা, হাতের তালু, পায়ের পাতার নিচে ফুস্কুড়ি এবং জ্বালা যন্ত্রণা ইত্যাদি দেখা দেওয়ার পর অনেক সময় সাধারণ চিকিৎসা অথবা এমনিতেই ভাল হয়ে গেছে মনে হলেও পূর্ণ চিকিৎসা না করালে তা আবার পুনারায় কয়েক বছর পর ও দেখা দিতে পারে – রক্তে জীবাণুটি সুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে থাকে এবং উক্ত ব্যাক্তি অন্য সুস্থ কারও সাথে যৌন মিলন , যৌনাঙ্গ চুম্বন, টোঠ চুম্বন , রক্ত দান ইত্যাদির মাধ্যমে সুস্থ ব্যাক্তির দেহে জীবাণু সংক্রামিত করে থাকে। বাংলাদেশ তথা ভারত বর্ষে এই অসুখটি অবৈধ এবং ভাসমান যৌনকর্মের মাধ্যমেই সংক্রামিত হয় বেশী। এর মধ্যে পরপুরুষ বা নারী তে আসক্তরাই বেশী ভুক্ত ভোগী হয়ে থাকেন অসুখটির শেষ পরিনিতি হিসাবে স্নায়বিক অক্ষমতা ( ধ্বজভঙ্গ ) হৃৎপিণ্ডঘটিত ও যকৃতের অন্যান্য জটিল রোগ সৃষ্টি করে থাকে।
যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।

🩸 ভাইরাস জনিত যৌন ব্যাধি সমুহ ( Caused By Viruses ):

  1. জ্যানিটাল হারপিস- Genital Herpes:
    ( Herpes Simplex Virus )
    হারপিস এক ধরনের DNA ভাইরাস যা প্রধানত লালা এবং শরীরের অন্যান্য নি:সৃত রসের মাধ্যমে দেহে সঞ্চালিত হয়ে সংক্রমণ সৃষ্টি করে থাকে। হারপিস ভাইরাস আট ধরনের হয়ে থাকে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস দুই ধরনের হয়ে থাকে। যৌনাঙ্গে হারপিস ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যেটি হয়ে থাকে ইহা হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস এর কারণে হয়ে থাকে ( হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-2 বা জেনিটাল হারপিস )। 20 বছরের অধিক নারী পুরুষের ক্ষেত্রে এ সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
    জেনিটাল হারপিসের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় যৌনাঙ্গ, পায়ুপথ বা মুখের পাশে এক বা একাধিক ফোস্কা দেখা দিতে পারে। ফোস্কা গুলো ফেটে ব্যথাযুক্ত ক্ষতস্থানের সৃষ্টি করে থাকে। তখন রোগীর শরীরে ব্যথা, জ্বর এবং গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে।
    যোনিপথে, পায়ুপথে অনিরাপদ যৌনমিলন বা অনিরাপদ মৌখিক যৌনকর্মের – কারো যৌনাঙ্গ চুম্বন, লেহন বা চোষা, মাধ্যমে একজন থেকে আরেক জনের কাছে হারপিস সংক্রামিত হয়। যৌনাঙ্গের খুব ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শেও ,যখন ত্বকের স্পর্শে আসে, সংক্রামিত হতে পারে।
    যৌনাঙ্গে হারপিস প্রথমবার প্রকাশের পর পুনরায় সক্রিয় হওয়ার আগে শরীরের ভেতর ভাইরাস কিছু সময় নিষ্ক্রিয় থাকে এবং পরবর্তী কয়েক মাসে মধ্যে আবারো হারপিসের প্রকাশ ঘটায়, একে ( পুনঃ প্রকাশ বা পুনঃসংক্রমণ ) ও বলা
    হয়ে থাকে। এই ধরণের পুনাক্রমনে শরীরের ইমুনিটি সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায় বিধায় ক্যান্সার জাতীয় অসুখে ভোগার সম্বভনা থেকেই যায়।
আরো পড়ুনঃ  যৌনবাহিত রোগ -স্যাঙ্করয়েড | Chancroid | ডাঃ মাসুদ হোসেন।
  1. জেনিটাল ওয়ার্টস, জননেন্দ্রিয় আঁচিল – Genital Warts:
    ( Human Papillomavirus- HPV ) এই ভাইরাস গুলো পুরুষ বা মহিলাদের জননেন্দ্রিয়ে ছোট ছোট মাংসপিন্ডের মত পিন্ড গজায়। হিউম্যন পাপিলোমা ভাইরাস ( এইচ পি ভি- HPV ) দ্বারা। এই ওয়ার্ট, আঁচিল জননেন্দ্রিয় বা শরীরের অন্য অংশেও হতে পারে। ভাইরাস গুলো শরীরের সংষ্পর্শে আসার 01 থেকে 03 মাসের ভিতর জননেন্দ্রিয়ে এই ওয়ার্ট-আঁচিল দেখা দেয়।
    এই মাংসপিন্ড মহিলাদের যোনী দ্বারে, অন্ডকোষ বা মলদ্বারে হতে পারে। এই মাংসপিন্ডগুলি আলাদা আলাদা ভাবে একটা একটা করে বা একসঙ্গে অনেকগুলি হতে পারে। সেগুলিতে সাধারনত কোন ব্যথা হয় না তবে চুলকানি হতে পারে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই অন্য কোন লক্ষন দেখা যায় না এবং এই ওয়ার্টগুলি- আঁচিলগুলি চোখে দেখা কঠিন। যদি কোন মহিলার গর্ভাশয়ের সঙ্কীর্ন অংশে এই ওয়ার্ট-আঁচিল হয়ে থাকে, তাহলে এর ফলে অল্প স্বল্প রক্তপাত হতে পারে, অথবা রঙীন স্রাব বেরোতে পারে। এ ছাড়া এক্সটারনাল জেনিটাল এরিয়া, ভালবা, পেরিনিয়াম, পেরিনিয়াল স্কিন, পুরুষের নিম্ন অঙ্গ ও টেস্টিকুলার এরিয়াতে দেখা দিতে পারে।
    বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত একশত এর বেশী ধরণের জেনিটাল ওয়ার্টস-এর আবিষ্কার করেছেন। এসবের বেশীরভাগ সেক্সুয়াল কন্ট্যাকটির-এর মাধ্যমে ছড়ায়। অর্থাৎ- হিউম্যান পেপিলোমা ভাইরাসে আক্রান্ত পুরুষ অথবা মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপিত হলে এ ভাইরাস অন্যের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে এবং পরে স্বামী আক্রান্ত হলে স্ত্রীর বা স্ত্রী আক্রান্ত হলে স্বামী আক্রান্ত হয়ে থাকেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে জেনিটাল ওয়ার্টস আক্রান্ত স্থানসমূহে কোন ধরণের উপসর্গ থাকেনা। তবে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে এক্সটারনাল জেনিটাল এরিয়াতে সংক্রমণ ঘটলে মাঝে মধ্যে চুলকানি থাকতে পারে। তবে ইন্টারনাল ওয়ার্টস হলে সাধারণত, কোন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়না। তবে আক্রান্ত স্থানের গ্রোথ বড় হলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন: মহিলাদের ক্ষেত্রে ব্যথা, রক্ত ক্ষরণ এবং স্বামী স্ত্রীর মিলনে ব্যথা অনুভূত হতে পারে এবং দীর্ঘদিন চিকিৎসা না করলে অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ করে মহিলাদের আক্রান্ত স্থানগুলো ইনফেকশন হয়ে ফুলে যায়। তীব্র ব্যথা হয় এবং নানা জটিলতা তৈরী হতে পারে।
যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।
  1. হেপাটাইটিস- B এবং C – Hepatitis B and C: ( Infrequently – Hepatitis Viruses – Types A, E )
    ভাইরাস আক্রান্ত অসুখের মধ্যে হেপাটাইটিস-B একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যদি ও ইহা বিভিন্ন ভাবে ছড়াতে পারে , তারপর ও গড়ে যৌন মিলনের মাধ্যমে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন পুরুষরা, যা এইডসের এর চেয়েও 100 গুন বেশী সংক্রামক, এটি যকৃতের ক্ষতিসাধন করে, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যান্সার, জন্ডিস, লিভার ক্রণিক বা প্রদাহ, হপাটোসেলুলার কারসিনোমা, কিডনী সমস্যা ইত্যাদি তে জটিল সমস্যা দেখা দেয় এবং অসুখটির তৃতীয় ধাপে মৃত্যু চাড়া আর অন্য কোন পথ নেই। সাধারনত তরল পদার্থ ও চামড়ার সংস্পর্শেও এ রোগ ছড়াতে দেখা গেছে। রক্তে হেপাটাইটিস- B ধারনকারী কাউকে রক্ত প্রদানে এ রোগ হতে পারে, এ ছাড়া যেকোন প্রকার যৌন আচরন, যেমন: অবৈধ ও অবাধ যৌন মিলন, সমকামিতা, বীর্য পান করা, মুখে যৌন ক্রিয়া, অথবা চুম্বনের ফলেও এটি ছড়ায়। আক্রান্ত মা থেকেও সন্তান এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
    ( এ ক্ষেত্রে শিশুর সংক্রামন ঝুকি 90%)।
    ( আক্রান্ত সন্তান থেকে মা আক্রান্ত হবার ঝুঁকি 20%)।
    এটি একটি ছোয়াছে ভাইরাস বিধায় পরিবারের এক সদস্য থেকে দ্রুত অন্য সদস্যরা আক্রান্ত হতে পারেন। এটি সহজে সনাক্ত করা যায় না। এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সাধারণত: কোন লক্ষণ বহন করে না বিধায় কাছের অন্যরা নিজের অজান্তে সংক্রমিত হতে পারে। অনেক সংক্রামিত পুরুষ বা মহিলা নিজেই জানেন না তিনি এই ঘাতক ব্যাধির দ্বারা সংক্রামিত, যতক্ষন পর্যন্ত শরীরের ইমিউনিটি শক্তি ঠিক থাকে , বিশেষ করে 20-35 বছরের যুবক- যুবতি , ভারত বর্ষ , বাংলাদেশে এর বিস্তার ক্রমশ বেড়েই চলছে এবং এভাবে চলতে থাকলে এর বিপর্যয় এইডসের চাইতে ও ভয়ানক হতে পারে।
  2. এইডস ( Human Immunodeficiency Virus – HIV :
    এইডস – ইংরেজি: AIDS পূর্ণ রূপ, ( Acquired Immunodeficiency Syndrome ) হচ্ছে ( HIV ) নামক ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট একটি ব্যাধি, যা মানুষের শরীরের রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। এতে করে একজন এইডস রোগী খুব সহজেই যে কোন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যু অনিবার্য !
    মানবদেহে HIV- প্রবেশ করার সাথে সাথেই শরীরে এইডস এর লক্ষণ দেখা যায় না। HIV- শরীরে প্রবেশ করার ঠিক কতদিন পর একজন ব্যক্তির মধ্যে এইডস এর লক্ষণ দেখা দেবে তা ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এবং অঞ্চলভেদে ভিন্ন হয়। তবে এটা মনে করা হয়ে থাকে যে, HIV- সংক্রমণের শুরু থেকে এইডস- এ উত্তরণ পর্যন্ত সময়ের ব্যাপ্তি সাধারণত 06 মাস থেকে বেশ কয়েক বৎসর এবং কোন কোন ক্ষেত্রে 5-10 বৎসর অথবা তারও বেশি সময় সুপ্তাবস্থায় থাকে এবং দেখতে সুস্থ মনে হয় এ সময় উক্ত ব্যাক্তির এইচআইভি ভাইরাস তার অজান্তেই অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তির দেহে ছড়িয়ে দিতে পারে বিশেষ করে আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে দৈহিক মিলন, রক্ত দান, আক্রান্ত ব্যাক্তির সুচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহার ইত্যাদি মাধ্যমে সংক্রামিত হয়ে থাকে। প্রাথমিক লক্ষণ অনুসারে শরীরের ওজন অতি দ্রুত হ্রাস পাওয়া , দীর্ঘদিন – দুমাসেরও বেশি সময় ধরে পাতলা পায়খানা , পুনপুন জ্বর হওয়া বা রাতে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, অতিরিক্ত অবসাদ অনুভব হওয়া , শুকনা কাশি ইত্যাদি সহ শরীরের ইমিউনিটি শক্তি ক্ষয় হতে থাকে এবং ক্রমান্বয়ে এই ভাইরাস মানবদেহে রোগ প্রতিরোধকারী কোষ সমূহকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে ফেলে। ফলে মানুষ তার শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং তখন অন্যান্য রোগে আত্রান্ত হয়ে এক পর্যায়ে মারা যায়।
  1. মলাস্কাম বা চুমু রোগ – The Kissing Disease:
    ( poxvirus )
    মলাস্কাম – এটা হচ্ছে একটা চামড়ার রোগ। এই রোগ হয় মলাস্কাম কন্টাজিওসাম নামক ভাইরাসের দ্বারা। এই রোগের ফলে চামড়ায় ছোট ছোট ফোলা দেখা দেয়। এই ফোলাগুলি দুই সপ্তাহ থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। মলাস্কামের এই ফোলাগুলি উরুতে, পাছাতে, জননেন্দ্রিয়ে এবং কখনও কখনও মুখেও হতে পারে। এই ভাইরাস যৌনমিলন এবং মুখের লালা অথবা আক্রান্ত ব্যাক্তির কাপড়চোপড় দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে । সে জন্য এর অন্য নাম চুমু রোগ বলে ডাকা হয়।
  2. জিকা ভাইরাস – Zika Virus:
    শেষ পর্যন্ত জিকা ভাইরাস কে ও যৌন রোগ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, যদি ও ভাইরাস টি সংক্রামিত হয় ডেঙ্গু মশার মাধ্যমে কিন্তু যখন কোন পুরুষ অথবা মহিলা আক্রান্ত হন তখন উক্ত ব্যাক্তি থেকে যৌন মিলনের মাধ্যমে সুস্থ দেহে সংক্রামিত হতে পারে ( মুখ বা ঠোঁটের লালা অথবা ওড়াল সেক্সের মাধ্যমেই বেশী সংক্রামিত হয়ে থাকে এবং ভাইরাসটি রক্তের চাইতে পুরুষের বীর্যে অনেক দিন ধরে জীবিত থাকতে পারে ) লক্ষণ হিসাবে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে জ্বর, র‌্যাশ ( চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি ), গোঁড়ালিতে ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যায় ইত্যাদি জ্বরের মত লক্ষণ দেখা দেয় সেই সাথে মাংসপেশী ও মাথায়ও ব্যথা হতে পারে এরপর দীর্ঘদিন আর তেমন লক্ষণ দেখা না গেলেও মহিলাদের গর্ভস্থ সন্তানের জন্য খুব বেশী বিপজ্জনক ( মাইক্রোসেফালির মত ) কারন- শিশুদের মস্তিষ্কের গঠন ঠিকমতো হয় না, ফলে শিশুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়া,শারীরিক বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বা বিলম্বিত হওয়া থেকে শুরু করে আজীবন শিশুটি মস্তিষ্ক বিকলাঙ্গতা সহ স্নায়ুবিক অচেতনতায় ভুগবে এবং যার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন বা ঔষধ এখন ও বাহির হয়নি।
  3. অন্ত্রের প্যারাসাইট – Intestinal Parasites:
    যদিও অসুখটি পানি বাহিত রোগ যাকে আমরা আমশয় বলে থাকি , তারপর ও এমিয়োবিয়াসিস এবং জিয়ারডিয়াসিস প্যারাসাইট জীবাণু সমুহ যৌনমিলনের সময় একজনের থেকে আরেকজনের মধ্যে সংক্রামিত হয়ে থাকে। যেমন: বীর্য পান করা, মুখে যৌন ক্রিয়া এবং মলদ্বারের যৌন সঙ্গমের মাধ্যমেই পেটের অন্ত্রে গিয়ে তা বাসা বেধে থাকে। লক্ষণ অনুসারে বেশীর ভাগ সময় দেখা যায়, বিনা কারনে পেটের গন্ডগোল যার কোন শারীরিক অন্য কারন খোঁজে পাওয়া যায়না ( পাটে কামড়, মোচড়ানো এবং ব্যাথাার সাথে সাথে পায়খানায় যাওয়া ইত্যাদি, দিনে 1/2 বার এবং অসুখটি পূর্ণ পেলে মাঝে মধ্যে আমাশয়ের পূর্ণ লক্ষণ দেখা দেয় , যে সকল পুরুষ ওড়াল যৌন ক্রিয়া করেন, তাদের এই অসুখটি বেশী হয়ে থাকে এবং মহিলাদের বেলায় লিউকোরিয়া জাতীয় সমস্যা বেশী দেখা দেয়।
  4. ট্রাইকোমোনিয়াসিস ভ্যাজিনোসিস -Trichomoniasis: ( Trichomonas Vaginalis )
    একে ট্রিচ ও বলা হয় এবং এটি প্যারাব্যাসিলাইটস শ্রেণীর অন্তরভুক্ত ( Parabasalids ) একটি পরজিবি জীবাণুর অসুখ যা মহিলাদের যোনীতে এবং পুরুষদের মুত্রনালীতে পাওয়া যায় যদি ও মুখ গহব্বর এবং পায়ু পথে দীর্ঘ সময় বাঁচেনা। প্রাথমিক অবস্থায় পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সময় ব্যথা ও জ্বালা যন্ত্রণা এবং সাদা পানির মত পিচ্ছিল পদার্থ দেখা দেয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে স্রাব, যৌনমিলনের সময় এবং প্রস্রাবের সময় ব্যথা এবং যোনীদ্বারে ফোলা এবং ব্যথা ইত্যাদি ( এশিয়া মহাদেশে মহিলাদের সাদা স্রাব জাতীয় অসুখের অন্যতম একটি কারন এবং উক্ত জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত ব্যাক্তি সুচ কৃমির উপদ্রব প্রায় লেগে থাকে ) অসুখটি যে ব্যক্তি এই জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত তার সাথে যৌনমিলন করলে সুস্থ মহিলা বা পুরুষ সংক্রামিত হয়ে থাকেন। অসুখটি বেশী দেখা দেয় যাহারা ঠিকমত যৌনাঙ্গ পরিস্কার না রাখেন তাদের বেলায় এবং মহিলাদের বেলায় জীবাণুটি তার অন্যান্য শ্রী রোগ জাতীয় অসুখে যুক্ত হয়ে বেশ জঠিল সমসসার তৈরি করে, যা ভাল হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন।
যৌন বাহিত রোগব্যাধি এর হোমিও চিকিৎসা এবং সচেতনতা।
  1. টিনিয়া ক্রুরিস- Jock Itch: ( Tenia Cruris ) কুচকি দাদ
    যদি ও ইহা একটি ফাঙ্গাস বা ছত্রাক জীবাণু জাতীয় অসুখ বা ভিন্ন-পরিবেশে ( কাপড়-চোপড়, বিছানাপত্র, বসার স্থান ইত্যাদি ) সংক্রামিত হতে পারে, কিন্তু টিনিয়া ক্রুসিস বেশীর ভাগই যৌন মিলনের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়ে থাকে বিধায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে যৌন রোগের আওতায় সংযোজিত করা হয়েছে। অসুখটি পুরুষদের বেলায় অন্ডথলির ত্বকে এবং মহিলাদের বেলায় যোনির ও তার আসেপাশের অঞ্ছল, পায়ু এলাকা, নিতম্ব এবং পেটের বিভিন্ন পাশে বিস্তৃতি ঘটে থাকে , যা দেখতে ত্বক লালচে বর্ণের , ত্বক আঁশের মত হয়ে ফুলে ওঠা, ত্বক আঁশের মত হয়ে ফুলে ওঠে এবং সব সময় চুল্কায়, সেই সাথে ব্যাক্টোরিয়া যুক্ত হয়ে পুঁজের সৃষ্টি করে।
  2. ঈস্ট বা ছত্রাক জনিত সঙ্ক্রামন – Vaginal Yeast Infection: ( Candida Albicans )
    ইহা ক্যান্ডিডা এল্বিক্যান্স ছত্রাক দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের যৌনাঙ্গে পরজীবী হিসেবে বাস করতে পছন্দ করে। যৌনাঙ্গের চুলকানি বা ইচিং হওয়ার অন্যতম কারণ এই ছত্রাক- ল্যাকলোব্যাসিলাস নামে উপকারী ব্যাকটেরিয়া এই ছত্রাকের বংশবিস্তারকে নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু যে কোন কারনে ( বেশী এন্টিবায়োটিক খেলে, গর্ভাবস্থায়, দুশ্চিন্তাগ্রস্থ , হরমোনাল ইমব্যালেন্স , খাদ্যাভাস ) উপকারী ব্যাকটেরিয়া মরে গেলে ঈস্টগুলো তাদের জন্মের জন্য অনুকূল পরিবেশ পেয়ে যায় আর তখন মহিলাদের যোনিতে এই ভাইরাসের আক্রমন বেশী দেখা দিয়ে থাকে ( যোনিতে ইনফেকশন, যোনি পথ দিয়ে ঘন সাদা তরল পদার্থ নির্গমন, চুলকানি, যৌন মিলনের সময় ব্যথ্যা ইত্যাদি, মহিলাদের লিউকোরিয়া জাতীয় অসুখের আরেকটি প্রধান কারন এটি। পুরুষদের বেলায় ঘা, লিঙ্গ চুলকানি ,লিঙ্গের চামড়া পেছনে টানতে অসুবিধা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। যে কোন একজন ক্যান্ডিডা এল্বিক্যান্স ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত থাকলে যৌন মিলনের মাধ্যমে সুস্থ ব্যাক্তির দেহে তা সংক্রামিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে ভাসমান যৌনকর্মীদের এই অসুখটি বেশী হয়ে থাকে অসুখ টি প্রথমে খুব কম ধরা পড়ে বিধায় অনেকেই যএ তএ এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন করেন এবং তখন তা আর বৃদ্ধি পায়।
  3. যৌনাঙ্গের উকুন- Pubic lice Or crabs: ( Pediculosis Pubis ) এইগুলি হচ্ছে কাকড়ার মত ছোট পরগাছা প্যারাসাইটস। এইগুলি চুলের মধ্যে বাস করে এবং রক্ত শুষে খায়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই যৌন এলাকার চুলের ভিতর থাকে অথবা বগলের চুলে, শরীরের অন্যান্য জায়গায় এমন কি মুখের এলাকায়, যেমন ভুরুর ভিতরেও এই জীবানুগুলি থাকতে পারে। এগুলি সাধারনত যৌন সঙ্গম করার সময় একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে যায় অথবা সেই ব্যাক্তির ব্যবহিত জামাকাপড়, বিছানার কাপড়চোপর অথবা টাওয়েল থেকে অন্য সুস্থ শরীরে ঢোকতে পারে।
  4. খোস-পাঁচড়া- Scabies: ( Sarcoptes scabiei )
    খোস-পাঁচড়া হয়ে থাকে সারকোপটেস স্ক্যাবি নামক পরজীবী কীটের কারণে । এইগুলি চামড়ার নীচে ঢুকে যায় এবং এর ফলে চুলকানি হয়। এই প্যারাসাইটগুলি খুবই ছোট এবং এগুলিকে চোখে দেখা যায় না। বহু লোকেই জানেন না যে তাদের এই রোগ আছে। এই রোগের ফলে চুলকানি হয় এবং এটা আরম্ভ হয় সংক্রামনের 02 থেকে 06 সপ্তাহের ভিতর। হাতের চামড়ার নীচে পাছায় বা জননেন্দ্রিয়তে লাল লাল লাইন দেখা দেওয়া এই রোগের চিহ্ন । যে কোন পরিবেশগত কারনে ইহা সংক্রামিত হলে ও যৌন মিলনের সংস্পর্শে বেশী সংক্রামিত হতে দেখা যায় ।
ডা.মাসুদ হোসেন -হোমিও চিকিৎসক

🇨🇭 কি কি লক্ষণ দেখা দিলে যৌন জীবাণু সংক্রামিত বলে মনে করতে পারেন ?

🩸 প্রাথমিক অবস্থায় দেখতে হবে অজানা অথবা অবৈধ ভাবে কারও সাথে যৌন -মিলন , শারীরিক স্পর্শ অথবা ঐ জাতীয় কিছু করেছেন কিনা?

🩸 এ ছাড়া কিছু কিছু ভাইরাস , ক্যান্ডিডা এবং পরজীবী জীবাণু আছে যা যৌন মিলন না করলে ও পরিবেশগত অনেক কারনেই সংক্রামিত হতে পারে তাও খুজে বের করতে হবে হবে, নতুবা চিকিৎসা করে সুস্থ হলেও আবার সংক্রামিত হতে পারেন।

🛑 সাধারণত পুরুষের বেলায়:

🩸 যৌনাঙ্গে চুলকানো এবং উক্ত অঞ্চলের যে কোন জায়গায় জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা, প্রস্রাবের রাস্তায় পূঁজ, পুরুষাঙ্গে ঘা বা ক্ষত, অন্ডকোষে ব্যাথা ও ফোলা, ঘন ঘন প্রস্রাব বা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা, কুচকি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা ইত্যাদি, তখন দেরি না করে আপনার হাউজ ফিজিশিয়ানের সাথে পরামর্ষ নিতে হবে এবং তিনির উপদেশ অনুসারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অথবা সাধারণ প্যাথলজিক্যাল কিছু পরিক্ষা করে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারবেন আপনার শরীরে যৌন রোগ সংক্রামিত হয়েছে কি না ?

🩸 মনে রাখবেন অনেক জীবাণু আছে যা শুধু মাত্র মহিলাদের যৌনাঙ্গে সুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে থাকে যা উক্ত মহিলা নিজেই জানেন না – কোন সমস্যা না করায় , অথচ মিলনের পর পুরুষের দেহে সংক্রামিত হওয়ার পর তা ধরা পড়ে।

🛑 মহিলাদের বেলায়:

❤ যোনিপথে- পায়ুপথে ব্যথাযুক্ত বা ব্যথাহীণ ফোড়া, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া করা, যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, যৌনাঙ্গে ক্ষত বা ঘা অথবা যোনিপথে রক্তপাত, যোনিপথে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া, তলপেটের দুইদিকে ব্যথা,সহবাসের সময় ব্যথা, কুঁচকিতে ব্যথা, বা লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া এবং অনেকসময় জ্বর এবং ফ্লু এর মত অসুখের লক্ষণ দেখা দিলেও তা এমনিতেই সেরে যায়।

🩸 মনে রাখবেন এ সব উপসর্গ অবৈধ ভাবে কারও সাথে যৌন মিলন , শারীরিক স্পর্শ অথবা ঐ জাতীয় কিছু করার কয়েক দিন , কয়েক সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর ও দেখা দিতে পারে। পুরুষের বেলায় ও অনুরুপ ভাবে অনেক জীবাণু আছে যা পুরুষদের তেমন ক্ষতি না করলেও মহিলাদের জন্য খুবী বিপজ্জনক অথবা অনেক জীবাণু আছে পুরুষদের শরীরে সুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে থাকে এবং যৌন মিলনের মাধ্যমে সুস্থ শরীরে ঢোকে পড়ার পর বিপরিত লিঙ্গের ভাইরাল রিয়েক্টিভিটি ইন্টলারেন্সের জন্য অসুখটি সাথে সাথে দেখা দেয়। তখন দেরি না করে আপনার বিশ্বস্ত হাউজ ফিজিশিয়ানের পরামর্ষ নেওা উচিৎ।

🩸 ভুলে গেলে চলবেনা , যৌন সংক্রামিত অনেক জীবাণু আছে আছে যা চিকিৎসা ছাড়াই লক্ষণ ও উপসর্গ গুলো কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যেতে পারে কিন্তু পরবর্তীতে বার বার উক্ত লক্ষণ সহ অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে অর্থাৎ উক্ত আক্রান্ত ব্যাক্তি যৌন জীবাণু বহনকারী হিসাবে চিহ্নিত, সাবধান ! একজন যৌন জীবাণু আক্রান্ত ব্যাক্তি গোটা পরিবার তথা সমাজ বা অঞ্ছল কে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে টেলে দিতে পারে, তাই এসব বিষয় অবহেলা করা মোটেই উচিৎ নয় বরং সন্দেহ হলে তার তার সঠিক পরিক্ষা-নিরিক্ষা করা লজ্জার কিছু নয়।

🇨🇭 যৌন রোগে আক্রান্ত হলে সময় মত চিকিৎসা না করা হলে কি হতে পারে ?

🩸 মহিলা ও পুরুষের বেলায় বাচ্চা জন্মদানে অক্ষমতা ( Infertility ) , ধীরে ধীরে যৌন অক্ষমতা সহ প্রজনন তন্ত্রের অন্যান্য অসুখ বৃদ্ধি পেতে থাকে , যৌন সংক্রমণের কারণে স্নায়ু ও হৃদপিন্ডের সংবহননালীতে সমস্যা হওয়া, কিডনি, লিভার ইত্যাদির ইনফেকশন বেড়ে যাওয়া। তলপেটে প্রজনন অঙ্গের প্রদাহজনিত রোগ ব্রিদ্ধি পাওয়া, জরায়ু মুখের ক্যান্সার , স্মৃতিভ্রষ্টতা, মা থেকে শিশুরে রোগ সংক্রমণের ফলে শিশুর জন্মগত ত্রুটি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।

🛑 পুরুষ বা নারী সবারই যৌনাঙ্গে নানা ধরণের সমস্যা দেখা যায়, বা দেখা দিতে পারে। তবে অনেকেই যৌনাঙ্গের চুলকানি, ব্যথা, বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই মনে করেন এই বুঝি আমার কোনো যৌন রোগ হয়েছে। মটেও কিন্তু তা নয়। আমাদের দেহের ত্বকে নানা ধরণের সমস্যা হয়ে থাকে। এবং সেই রোগটি যৌনাঙ্গেও হতে পারে। তেমন একটি রোগ হচ্ছে একজিমা। একজিমা দেহের যেকোনো স্থানের মতো যৌনাঙ্গেও হতে পারে। তবে এটি কিন্তু যৌন রোগ নয়। যৌনাঙ্গে একজিমা হলে কেমন হতে পারে, এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন।

ডা.মাসুদ হোসেন -হোমিও চিকিৎসক

🛑 যৌনাঙ্গে দুই ধরনের একজিমা দেখা দেয়:

  1. কন্টাক্ট বা স্পর্শজনিত।
  2. খুশকিজাতীয় ( তবে খুশকিজাতীয় একজিমা যৌনাঙ্গে বিরল )।

🛑 খুশকিজাতীয় একজিমা হলে আক্রান্ত স্থান লাল এবং আঁশের ন্যায় দেখায়। কিন্তু আকৃতি সুনির্দিষ্ট নয়। তাই সব ত্বকই পরীক্ষা করে দেখা উচিত। কারণ এ জাতীয় একজিমা শরীরের অন্যান্য স্থান, যেমন: মাথা, কান, বুক, বগল ও পিঠেও দেখা যায়। অন্যদিকে কন্টাক্ট একজিমার কারণ হিসেবে রোগীরা নির্দিষ্ট সাবান ও সুগন্ধি যুক্ত স্প্রে ব্যবহার, বিশেষ কয়েক ধরনের কাপড় পরিধান, ওষুধ এবং কখনো বা আঘাতজনিত অবস্থার উল্লেখ করে থাকেন। একজিমা প্রথম অবস্থায় শুধুমাত্র আক্রান্ত স্থান লালচে দেখায়। একজিমা পুরাতন ও দীর্ঘস্থায়ী হলে ত্বক মোটা ও খসখসে দেখায় এবং তা থেকে মোটা আঁশের ন্যায় ওঠে।

🛑 চিকিৎসা: চিকিৎসার প্রথমেই কারণগুলো দূর করার চেষ্টা করতে হয়, তা না হলে সাফল্য আসে না। তাই যেসব একজিমার কারণ সাবান, স্প্রে, কাপড় ইত্যাদি সেসব ক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহার বর্জন করা উচিত। ওষুধের মধ্যে রয়েছে স্টেরয়েড ওষুধের দীর্ঘকালীন ব্যবহার। তবে বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করা উচিত।

🛑 অবৈধ ও অনিরাপদ যৌনসঙ্গমের ফলে অনেক মারাত্মক যৌন বাহিত রোগ সংক্রমিত হয়।যার ফলে যৌন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। নৈতিক শিক্ষা ও নিরাপদ যৌন জীবন এ ধরনের যৌন বাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারি। হোমিওপ্যাথিতে যৌন বাহিত রোগ সমূহের কার্যকরী চিকিৎসা রয়েছে। লক্ষনভিত্তিক ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে যৌন বাহিত রোগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড প্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে হবে।

homeo treatment

🇨🇭 ডাঃ মাসুদ হোসেন।
Dr. Masud Hossain.
( D. H. M. S )
( ডি, এইচ, এম, এস ) ঢাকা।

🇨🇭 বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড। [ নিবন্ধন নং- Gov.Reg. No. 35423 ] রেজিস্ট্রার প্রাপ্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

🇨🇭 আমার এই দুইটি নাম্বার:

   +8801907-583252
   +8801302-743871

( What’sApp- হোয়াটসঅ্যাপ এবং Imo- ইমো ) খোলা আছে, চিকিৎসা নিতে চাইলে আমার এই দুইটি নাম্বার ফোনে সেভ করে সমস্যাগুলো লিখে অথবা অডিও রেকর্ড দিয়ে জানাবেন। আমি ফ্রী হয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে চিকিৎসা দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

🛑 অরিজিনাল জার্মানী ঔষধ ও উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান।

🇨🇭 রোগী দেখার সময়:
🛑 বিকাল 05:00 রাত 10:00 টা পর্যন্ত।

🇨🇭 চিকিৎসা : সুখবর হচ্ছে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে মুক্তির উপায়।

🇨🇭 সতর্কতাঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঝুকিপূর্ণ।

☎+8801907-583252 (WhatsApp, IMO)।

☎ +8801302-743871 (WhatsApp, IMO)।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার সমস্যা মন খুলে বলুন।
Send via WhatsApp
error: Content is protected !!